দ্বাত্রিংশ পর্ব

63 4 8
                                    

৫৫

“অপেক্ষা করে না থেকে খাবার খেয়ে নিয়ো। আমি বাইরে খেয়ে নিবো। ফিরতে দেরী হবে।”

হোয়াটসঅ্যাপে আসা মেসেজের দিকে তাকিয়ে বিপর্ণার মুখে আঁধার নেমে এলো। যদিও এমনটাই আশংকা করেছিলো মনে মনে। তবুও মানুষের মন তো অযথা কালো মেঘে ছেয়ে যায়। আইজামের মেসেজের রিপ্লাই দিয়ে ভিডিও কল দিলো তামান্নার নাম্বারে৷ মায়ের চেহারার দিকে তাকিয়ে সমস্ত মন খারাপ নিমিষেই উধাও হয়ে গেলো৷ ওরা সবাই একসাথে খেতে বসেছিলো৷ ফোনটি টেবিলের মাঝেখানে রেখে তামান্না জিজ্ঞাসা করলো,
- একা খাচ্ছিস কেনো? আইজাম কোথায়?
- শহরে এমপি এসেছে৷ উনার নিরাপত্তার কাজে ব্যস্ত। এখনো বাড়ি ফিরেনি।
- রাতের খাবারটাও তোকে একলা খেতে হয়!
- একসাথেই খাই, মা। মাসে এক দুদিন আসতে দেরী হয়ে যায়। দুপুরের খাবারটাও ও বাড়ি এসে খেয়ে যায়৷

ওপাশ থেমে শাম্মী বললো,
- ননদিনী, এবার একটা বাচ্চা নিয়ে নেও৷ তাহলে আর একলা একা খাবার খেতে হবে না৷

খাবার টেবিলে বায়েজীদ হোসেনও উপস্থিত আছেন। বাবার সামনে এমন কথা বলায় ইমরুল ভ্রু উঁচু করে তাকালো শাম্মীর দিকে। নিমিষেই লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললো শাম্মী৷ ওপাশ থেকে বিপর্ণা বললো,
- তোমার সিরিয়াল আগে। তুমি আগে মা হও। তাই দেখে আমার অভিজ্ঞতা নেই।

ফোঁড়ন কাটলো ইমরান।
- কাকে কি বলতেছো ভাবি! ও নিজেই এখনো নিজেকে সামলাতে পারে না, আর সে সামলাবে আরেক বাচ্চা৷ গিয়ে দেখো ঘর ভর্তি ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে রেখে ডাস্টবিনের মধ্যে বসে আছে হয়তো।

তেঁতিয়ে উঠলো বিপর্ণা।
- তুই দেখছিস আমার ঘর? দাঁড়া ভিডিও কলে দেখাচ্ছি। একটা ময়লা যদি বের করতে পারিস।

ব্যাক ক্যামেরা অন করে পুরো ড্রয়িংরুম দেখিয়ে দিলো৷ তা দেখে ইমরান দমে গেলো না৷ উল্টো সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সাথে বললো,
- নিশ্চয়ই আইজাম ভাই গুছিয়ে রেখেছে৷ বেচারা! তোর মতো একটা অলস মেয়েকে বিয়ে করে ফেঁসে গেছে।
- বাজে কথা বলবি না। আমি এখন সব কাজ পারি৷ অনেক রান্না শিখেছি। খেতেও মজা।
- কে বলেছে খেতে মজা? তোর জামাই নিশ্চয়ই। বউয়ের মন রাখার জন্য এমন দু চারটে মিথ্যে কথা সব ছেলেই বলে। আমাদের ছেলেদের মন অনেক উদার৷ দুটো মিথ্যে কথা শুনে যদি বউ খুশি হয়, যাক হোক।
- তুই আয় একদিন আমার বাড়ি৷ নিজে খেয়ে বলবি৷
- মায়ের মতো করে শীদল রান্না করতে পারিস? দেখ আমরা শীদল দিয়ে ভাত খাচ্ছি৷

অলীককায়াWhere stories live. Discover now