দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিপর্ণার দিকে তাকিয়ে ডেকে উঠলো,
- সুকু...
আইজামের ধীর কন্ঠস্বর ঠান্ডা বাতাসের মতো কাঁপন উঠালো গায়ে৷ জড়োসড়ো হয়ে বসে আতংকিত হয়ে শক্ত করে চোখ দুটো বন্ধ করে নিলো সে৷ ধীর পায়ে সামনে এগিয়ে গিয়ে আইজাম বসলো ওর সামনাসামনি। রক্তে রঞ্জিত হাতটি আলতো করে ছুঁলো ওর গাল। ফর্সা মুখটি ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে। যেনো সমস্ত রক্ত শুষে নিয়েছে কেউ। আইজামের ছোঁয়ায় সে থরথর কেঁপে উঠলো। কিন্তু চোখ খুললো না। আইজাম তার ভারিক্কি কন্ঠস্বরে বললো,
- ডোন্ট বি এফ্রেইড। ওপেন ইউর আইস।কথাগুলো অনুরোধের থেকেও আদেশ শোনালো বেশি। চকিতে চোখ খুলে আইজামের দিকে তাকালো সে। ছলছল চোখ জোড়া থেকে জল গড়িয়ে পরবে এক্ষুনি। অনেক চেষ্টা করছে সেগুলো আটকানোর। গালে আইজামের হাতটি দেখে মাথাটি একপাশে সরিয়ে নিলো। আইজাম আবার হাত বাড়ালো ওর সুকুকে একটুখানি ছোঁয়ার আশায়৷ কিন্তু রক্তের ছোঁয়া থেকে নিস্তার পেতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে বিপর্ণা। উন্মাদের মতো দুপাশে মাথা দুলিয়ে বিরবির করলো,
- না, না প্লিজ।হাত গুটিয়ে নিয়ে আইজাম বললো,
- আমার দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখো৷ এটাই আমি৷ রিয়েল মি।বিয়ের আগে যেদিন প্রথম দেখা হলো, সেদিন রুদ্ররূপী আইজামকে দেখে ভয়ে বিপর্ণার অন্তরাত্মা কেঁপে উঠেছিলো। তবুও সেই আইজামের সাথে আজকের আইজামের আকাশ জমিন তফাৎ। বিয়ের পর আইজামের যে কোমল রুপের সাক্ষী সে হয়েছে তার সাথে সামনে বসে থাকা ব্যক্তিটির কোনো মিল নেই। ওর চেনা আইজামের ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি লেগে থাকতো। কখনো সখনো সে হাসি দেখা না গেলেও মুখের কোমলতা কখনো হারাতো না। সেই আইজামের আশেপাশে বিপর্ণা নিজেকে সুরক্ষিত অনুভব করতো। ভয় নামক বস্তুটি সেখানে কখনো স্থান পায়নি। অথচ সামনে বসে থাকা আইজাম রুপী মানুষটি কিছুক্ষণ আগে দুটো মানুষকে নির্মমভাবে হ*ত্যা করেছে। র*ক্তে রাঙা তার সারা গা। মুখমন্ডলে ক্রুরতা, চোখ হিংস্রতা, ঠোঁটের কোণে শয়তানি হাসির ঝিলিক। বিপর্ণা তার জলসিক্ত চোখে ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখলো মানুষটির শুষ্ক ঠোঁটে এখনো র*ক্তের তৃষ্ণা। শরীর জুড়ে শিকারের নেশা বইছে৷ যে কোনো সময় শিকারের উপর থাবা বসাবে। বিপর্ণার মনে হলো সে মৃত্যুর সামনে বসে আছে। নিজের কাঁপতে থাকা ঠোঁট দিয়ে সে কোনোরকম উচ্চারণ করলো,
YOU ARE READING
অলীককায়া
Romanceবিপর্ণার ফ্রেশ হতে সময় লাগলো আধাঘন্টা। শাড়ি পাল্টে হলুদ রঙের সুতি সালোয়ার কামিজ গায়ে জড়িয়েছে। অভ্যাসবশত ভেজা চুলগুলো মুছতে মুছতে বেরিয়ে এলো ওয়াশরুম থেকে। কিন্তু চোখের সামনে আইজামকে দেখে মনে পরলো সে এখন নিজের বাড়িতে, নিজের ঘরে নেই। ভেজা লম্বা চুলে হ...