৩৬
সকালবেলা হাঁটতে বেড়িয়েছে আইজাম। ভেবেছিলো আজকে বিপর্ণা যেতে চাইলে অপেক্ষা করার সময় নেই বলে চুপচাপ কেটে পরবে৷ কিন্তু আইজামের আগেই বিপর্ণা রেডি হয়ে বসে আছে। কফি নিতে এসে দেখা গেলো দিশারি কফিশপের মালিকের মুখে নেমেছে ঘোর আঁধার৷ কালচে মেঘের ছায়াঘেরা মুখটি দাঁতে দাঁত চেপে যে কফি বানাচ্ছে তাতে চুমুক দিয়ে ক্রেতাদের সকালটা বিগড়ে যাচ্ছে মুহুর্তেই। হালকা কেশে আইজাম নিজের উপস্থিতি জানিয়ে মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করলো। ওয়াদুদ একবার মাথা উঁচু করে চেয়ে দেখলো আইজামের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বিপর্ণাকে। মুখে কিছু না বলে চুপচাপ কফি বানিয়ে আইজামের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে শান্ত কন্ঠে বললো,
- এখানে পাশেই একটা খু ন হয়েছে। আপনারা শুনেছেন কিছু?আইজাম শান্তভাবে কফি দুটো হাতে নিয়ে পকেট থেকে একশত টাকার একটি নোট বের করে দিলো। ওয়াদুদ তার শার্টের বুকপকেট থেকে দুটো বিশ টাকার নোট আইজামের দিকে এগিয়ে দিলে আইজাম ভ্রু কুঁচকে তাকালো। খু নের কথা শুনে পাশে দাঁড়ানো বিপর্ণার চোখ গোল গোল হয়ে গেছে। উত্তেজিত কন্ঠে প্রশ্ন করলো,
- কোথায় খু ন হয়েছে?ওয়াদুদ বললো,
- অফিসার্স কলোনির মসজিদের সামনে।
- মসজিদের সামনে কেউ কীভাবে মা র্ডা র করে! খোদাভীতি নেই মানুষের?বিশ টাকার নোট দুটো ওয়াদুদের হাত থেকে নিয়ে আইজামও শান্ত কন্ঠে জবাব দিলো,
- আমরা কিছু জানি না।বিপর্ণার হাত ধরে সেখান থেকে দ্রুত সরে গেলো।
অফিসার্স কলোনির মসজিদে ফজরের আযান দিতে যথাসময়ে উপস্থিত হয়েছিলেন মসজিদের মুয়াজ্জিন। গেটের কাছে আসতেই বৈদ্যুতিক বাতির আলোয় একটি লোককে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকতে দেখেছিলেন। কেউ অসুস্থ হয়েছে ভেবে উনি দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে দেখলেন আশেপাশের মাটি কালচে হয়ে আছে। লোকটির বুকের বামপাশের ক্ষত, র ক্তাক্ত শার্ট দেখে তিনি নিশ্চিত হন যে আশেপাশের কালচে মাটি লোকটির র ক্তে রঞ্জিত হয়ে এমন বর্ণ ধারণ করেছে। দ্রুত লোকাল থানায় কল করে বিষয়টি সম্পর্কে জানান। এরপর নিজের দায়িত্ব অনুসারে কাঁপতে থাকা শরীর নিয়ে ফজরের আযান দেন।
সমস্ত ঘটনা এ নিয়ে তৃতীয় দফায় বর্ণনা করে ঢোক গিললেন মসজিদের মুয়াজ্জিন। প্রথমে থানার ওসি এসে একবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। এরপর অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার, সহকারী পুলিশ কমিশনার দুজনকে আবার বিস্তারিত শোনালেন। এখন থানায় বসে কনস্টেবলকে শোনাচ্ছেন। উনার জবানবন্দি কনস্টেবল খাতায় লিখে রাখছে।
আর কাকে কাকে এ ঘটনার বর্ণনা দিতে হবে কে জানে!
YOU ARE READING
অলীককায়া
Romanceবিপর্ণার ফ্রেশ হতে সময় লাগলো আধাঘন্টা। শাড়ি পাল্টে হলুদ রঙের সুতি সালোয়ার কামিজ গায়ে জড়িয়েছে। অভ্যাসবশত ভেজা চুলগুলো মুছতে মুছতে বেরিয়ে এলো ওয়াশরুম থেকে। কিন্তু চোখের সামনে আইজামকে দেখে মনে পরলো সে এখন নিজের বাড়িতে, নিজের ঘরে নেই। ভেজা লম্বা চুলে হ...