দ্বাবিংশ পর্ব

42 1 0
                                    

৪০

পড়ন্ত বিকেলে একটি বাস এসে থামলো ব্যস্ত নগরীর একেখান রোডে। আড়মোড়া ভেঙে রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে চারদিকে তাকিয়ে দেখলো। অপরিচিত শহর, অচেনা মানুষ। তার থেকেও আশ্চর্য এই শহরের যানবাহনের গতি। চোখের সামনে দিয়ে মুহুর্তেই এপাশ থেকে ওপাশে চলে যায়। উত্তপ্ত দুপুরে বাসের স্বল্প স্থানে বসে থাকা সে এক অসহ্যকর অনুভূতি। পাশের দোকান থেকে একটা ঠান্ডা পানির বোতল কিনে নিলো রুমা। পানি পান করে শরীরের ভেতরের উত্তাপ যখন বিলীন হলো তখন ব্যাগ থেকে ফোন বের করে আইজামকে কল দিলো। এবার মনের উত্তাপ বিলীন করার পালা।
ফোনের স্ক্রিনে রুমার নামটি দেখেও আইজামের মধ্যে কোনো তাড়া দেখা গেলো না। এই ফোনকলটির অপেক্ষাই সে করছিলো৷ চাইলে নিজে কল করে রুমার অবস্থান জেনে  নিতে পারতো। কিন্তু ইচ্ছে করেনি। আস্তেধীরে ফোনটি টেবিলের উপর হতে তুলে নিয়ে রিসিভ করলো।
- আইজাম ভাই, আমি শ্যামলী বাসস্ট্যান্ডে দাড়িয়ে আছি। এসে নিয়ে যাও।
- কিছুক্ষণ সময় লাগবে পৌছাতে।
- সমস্যা নেই। আমি অপেক্ষা করছি।
- এর থেকে ভালো হয় তুমি একটা সিএনজি নিয়ে চলে এসো।
- ঠিকানা জানি না।
- আমি বলে দিচ্ছি।

সিএনজিচালককে বাড়ির ঠিকানা বুঝিয়ে দিয়ে আইজাম নিজে দ্রুত বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো। রুমার হঠাৎ আগমনে বিপর্ণার প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে সেটাই ভাবাচ্ছে।
বিপর্ণা অবশ্য এতোকিছু ভাবলোই না। পুষ্পকলির সামনে পৌঁছে রুমা আবার কল দিয়েছিলো। এরপর আইজাম গিয়ে রুমাকে নিয়ে এসেছে। সদর দরজায় রুমাকে দেখে উচ্ছ্বসিত হলো বিপর্ণা। বাড়িতে অতিথির আগমনের থেকেও একজন মানুষের সান্নিধ্য পাওয়ার ব্যাপারটি বিপর্ণাকে বেশি আনন্দিত করেছে। রুমা বোধহয় খুব ক্লান্ত ছিলো। শুকনো মুখে চারপাশে নজর বুলিয়ে বিপর্ণাকে বললো,
- কোথায় থাকবো ঘরটা দেখিয়ে দেও বিপর্ণা। ফ্রেশ হয়ে লম্বা ঘুম দিবো।

বেডরুমের পাশের গেস্টরুমে জায়গা হলো রুমার৷ অতিথিকে ঘর দেখিয়ে দিয়ে বিপর্ণা অস্থির পায়েচারি করছে। অসময়ে অতিথি এসে হাজির হবে কে জানতো? দুজনের জন্য পরিমিত রান্না হয় তিনবেলা। এই বিকেলবেলা এখন খাবার কোথায় পাবে? আইজাম বললো,
- ভারী কোনো নাস্তা তৈরি করে দেও।
- সারাদিন নিশ্চয়ই ভাত খাওয়া হয়নি। বাস থেকে নেমে এখন আবার নাস্তা খেতে ভালো লাগবে না। আমি বরং চট করে ভাত বসিয়ে দেই। ফ্রিজে মুরগীর গোশত আছে। সেটা ভুনা করে দিবো।

অলীককায়াWhere stories live. Discover now