সপ্তদশ পর্ব

48 0 0
                                    

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঠেলাঠেলি করে তৈরি হচ্ছে। সালোয়ার কামিজ পরে ওড়নাটা দু কাধের উপর ছড়িয়ে দিয়েছে৷ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর আইজাম বললো,
- স্কার্ফ দিয়ে হিজাব পরে নেও।

লম্বা চুলগুলো চিরুনি করতে থাকা হাতটি থেমে গেলো। বিপর্ণার মা এনিয়ে কতো বকতেন। চুল ঢেকে বাইরে যা। কিন্তু বিপর্ণা শুনতো না৷ মায়ের সাথে ধুমধাড়াক্কা লেগে যেতো৷ এখন আইজাম একই আদেশ করলো৷ চুলগুলো পাঞ্চক্লিপে বেধে চোরা চোখে আইজামের দিকে তাকালো। আজকে ইউনিফর্ম পরেনি৷ ভর্তির ব্যাপারে কথা বলতে বিপর্ণা কলেজে যাবে। পিছু নিয়েছে আইজাম। সেও সাথে যাবে। বিপর্ণার মনে হচ্ছে, অন্য পুরুষদের মতো আইজামও ওভারপজেসিভ। একা কোথাও যাওয়া যাবে না, কারো সাথে কথা বলা যাবে না, এটা পরা যাবে না, ওটা পরতে হবে৷ আগের বিপর্ণা হলে এতোক্ষণে তর্কের ঝড় বয়ে যেতো৷ বিয়ের পর কি হয়েছে কে জানে! মনের কথা আর মুখে আসে না। খুব কাছের মানুষ হয়েও সামান্য দূরত্ব রয়েই যায়। নিজের পরিবারের মানুষদের সামনে কোনো ফরমালিটি মেইনটেইন করতে হয় না৷ কিন্তু বিয়ের পর বাকিটা জীবন সামাজিকতা মেনে চলতে গিয়ে মনের সাথে লুকোচুরি খেলতে হয়। আইজাম হিজাব পরিধানের আদেশ করুক কিংবা অনুরোধ, এটি একটি যৌক্তিক চাওয়া। এখানে তর্ক বিতর্কের সুযোগ নেই। যেকোনো সমস্যা এখানে অযুহাত। নিজের সমস্যা চেপে গিয়ে আলমারি থেকে ড্রেসের সাথে ম্যাচিং করে হিজাব নিয়ে এলো। নিজে হিজাব না পরলেও বান্ধবীদের বেশ উৎসাহ সহকারে হিজাব পরিয়ে দেওয়ার কাজটি করতো৷ তাই বেশ কয়েকটি স্টাইলে হিজাব বাধতে পারে বিপর্ণা। সেখান থেকে সবচেয়ে সহজ স্টাইলের সাদামাটাভাবে হিজাব পরে নিলো।

গায়ে সামান্য সুগন্ধি মেখে কাগজপত্র নিয়ে আইজাম বসেছে বিছানায়। প্রয়োজনীয় একাডেমিক পেপারস ইমরান মেইল করে দিয়েছিলো। বিছানার অপরপ্রান্তে চুপচাপ বসে আছে বিপর্ণা৷ সব গুছিয়ে নিয়ে আইজাম বললো,
- চলো বের হই।

বিছানা ছেড়ে নেমে আইজামের পাশে দাড়ালো। ওর দিকে তাকিয়ে আইজাম হতবাক। উত্তেজিত হয়ে পরলো ক্ষণিকেই।
- তুমি এভাবে ঘামছো কেনো? চোখ মুখ লাল হয়ে গিয়েছে।
- গরম লাগছে।
-  এই শীতল আবহাওয়ায় গরম লাগছে? বসো এখানে।

অলীককায়াWhere stories live. Discover now