ত্রয়োদশ পর্ব

54 0 0
                                    

২৫

প্রধান সড়ক থেকে ধীরে ধীরে উঁচু হয়েছে বাটালি হিলের পাদদেশ। এজন্য শহরের ভূমি উচ্চতা থেকে খানিকটা উঁচুতে অবস্থিত আইজামের বাড়ি। তবে কেনো যেনো ডুপ্লেক্স বাড়িটি একদম ভূমির সাথে গেঁথে উঠানো হয়েছে৷ পেছনের বারান্দা থেকে সামনের দিকে পা বাড়ালেই সবুজ ঘাস ছোয়া যায়। উত্তর-দক্ষিণমুখী বিছানায় শুয়ে পুবের জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে বিপর্ণা। বাইরে আবছা চাঁদের আলো৷ একলা বিছানায় ঘুম আসছে না৷ অথচ কয়েকদিন আগেই কারো পাশে ঘুমাতে পারতো না। নিজের বিছানায় একলা ঘুমানোর অভ্যাসটা আইজামের আগমনে পাল্টে গেছে৷ আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরা ছাড়া একদমই ঘুমাতে পারে না আইজাম৷ বিপর্ণা যখন উল্টোদিকে মুখ ফিরে শোয়, তখন পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। আবার যখন ডানদিকে কাঁধ করে শোয় তখন বুকে জড়িয়ে নেয়। সেসব ভেবে আনমনে হেসে উঠে বিপর্ণা। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো রাত বারোটা বাজে। এখনো ফিরেনি আইজাম। থানায় কিসের যেনো জরুরি কাজ পরে গেছে৷ ফিরতে দেরী হবে৷ বিপর্ণাকে ঘুমিয়ে পরতে বলে কল কেটে দিয়েছে৷ বিপর্ণার অভ্যাস বিগড়ে দিয়ে লোকটা এখন লুকোচুরি খেলছে৷

আইজাম বাড়ি ফিরলো সাড়ে বারোটায়। বিপর্ণাকে জেগে থাকতে দেখে অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো,
- ঘুমাওনি এখনো?
- দশটায় বাজতেই ঘুমিয়ে গেছি। এই দেখুন, চোখ খুলে এখনো ঘুমাচ্ছি।

বিপর্ণার বাঁকা কথায় আইজাম মুচকি হাসলো। বিছানায় পিঠ ঠেকিয়ে আধাশোয়া হয়ে বসে ছিলো বিপর্ণা। আইজাম ওর কাছে এসে দাঁড়িয়ে কপালে চুমু দিয়ে বললো,
- জরুরি কাজ ছিলো। তাই দেরি হয়ে গেল। অভ্যাস করে নেও। তোমার স্বামীর পেশাটাই এমন। যখন তখন ডিউটি কল চলে আসে। তুমি শুয়ে পরো। আমি গোসল সেরে আসছি।

বিয়ের প্রথম কয়েকদিন একদম ঘড়ি ধরে অফিস থেকে বাড়ি ফিরতো। আজকেই প্রথম এমন অসময়ে বাড়ি ফেরা৷ মানিয়ে নিতে কষ্ট হচ্ছে বিপর্ণার। আইজাম ওয়াশরুমে যাচ্ছিলো। বিপর্ণা বললো,
- রাতে খাবেন না?
- বাইরে খেয়েছি৷ তুমি খেয়েছো?
- হ্যাঁ।
- সত্যি?
- মিথ্যে বলবো কেনো?
- এখন ক্ষুধা পেয়েছে?
- মোটেও না। আমি আপনার কথা ভেবে জিজ্ঞাসা করছি।
- আপাতত আমার প্রচন্ড ঘুম পেয়েছে।

অলীককায়াWhere stories live. Discover now