পঞ্চত্রিংশ

34 2 3
                                    


৬০

টানা এক বছরের কঠোর তপস্যার ফলে অনেক অভ্যাস আয়ত্ত করা সম্ভব হয়েছে। যার বেশিরভাগই প্রশংসনীয়। তন্মধ্যে নিন্দনীয় শুধুমাত্র একটি।

অত্যাধিক রেগে গিয়ে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা।

ফলস্বরূপ প্রায়ই সিনিয়রদের প্রকোপের মুখে পরতে হয়৷ বিঘ্নতা এড়াতে মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারটা সবসময় মাথায় রেখে চলে৷ কিন্তু শতভাগ কার্যকরী এ জগতে কিছুই নেই৷ তাই তো এমন কুরুক্ষেত্রের সাক্ষী হতে হলো বিপর্ণাকে৷ গতবার যখন মেজাজের খেই হারিয়ে ফেলেছিলো তখন ফল ভোগ করতে হয়েছিলো হানানকে। এবার ঝড়টা গেলো বিপর্ণার উপর দিয়ে৷

এই তো কয়েক মাস আগে আগ্রাবাদ থেকে মোবাইল উদ্ধারের পর মা*দকদ্রব্যের কেসটি নিয়ে সিনিয়রদের সাথে আলোচনা হচ্ছিলো। আইজাম চাচ্ছিলো সরাসরি তদন্ত করা হোক৷ কিন্তু তথ্য প্রমাণ ছাড়া সিনিয়রদের পক্ষে সেটি সম্ভব হলো না৷ বাদশা ও বদরুলকে তুলে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক তথ্য পাওয়া যেতো৷ অনুমতি দিলো না সিনিয়ররা৷ সেই নিয়ে বাকবিতন্ডায় আইজাম নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। সিনিয়রের টেবিলে বিপুল শক্তি দিয়ে থাবা মেরে সেখান থেকে গটগট করে চলে যায়৷ কাঠের টেবিলটি ঠিক মাঝখানে ভেঙে টুকরো হয়ে গিয়েছিলো। পেছনে দাঁড়িয়ে ঠকঠক করে কাঁপছিলো হানান।
ভাগ্যের জোরে সেদিন দুজনে প্রাণ নিয়ে ফিরে এসেছে৷ কিন্তু শাস্তিস্বরূপ দুজনকেই এক মাসের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছিলো৷

আজ অনেকদিন পর আবারও নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারালো আইজাম৷ ঠিক থাকতোই বা কীভাবে? বিপর্ণার বিধস্ত চেহারা, এলোমেলো শাড়ি, এলিয়ে পরা আঁচল - সবকিছু বারবার চোখের সামনে ভাসছে। রাগ, ক্ষোভ, আক্রোশ ওকে নিয়ন্ত্রণহীন করে তুলেছে। সুজয়কে মে*রে ফেলে বিপর্ণার দিকে যখন তাকালো তখন ওর চোখে ভয়, অবিশ্বাস, ঘৃণা দেখে মেজাজ বিগড়েছে আরও। ও কেনো ভয় পাবে আইজামকে? এতোদিনে কি এতোটুকু বিশ্বাস জন্মেনি? ভালোবাসার মানুষটির চোখে ভয় দেখাটা মুখ্য বিষয় নয়৷ সমস্যা হচ্ছে ভয়ের কারনটা আইজাম নিজে। কাছে যেতে চাইলে ও ভয়ে পিছিয়ে গেলো৷ বারবার ছেড়ে যাওয়ার কথা বলছিলো। ছাড়ার জন্য আপন করে নিয়েছে নাকি? এভাবে বললে ছেড়ে দেওয়া যায়? ছোট একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডিভোর্স কথাটা মুখে আনতে পারলো?

অলীককায়াWhere stories live. Discover now