ঊনত্রিংশ পর্ব

53 2 0
                                    

৫০

চোখ ঝলসানো আলো সহ্য হচ্ছে না৷ জ্বালা করছে ভীষণ। বৈদ্যুতিক আলোতে উজ্জ্বল কক্ষ থেকে বেরিয়ে বিশাল করিডোর ধরে হাঁটতে হাঁটতে শেষ মাথায় পৌঁছে গেলো। গভীর রাত হওয়ায় চারপাশ নিস্তব্ধ। করিডোরের শেষভাগে একটা বিশাল জানালা। থাই গ্লাস ভেদ করে সুনসান রাস্তা দেখা যাচ্ছে। একটা রিক্সা নীরবে অলস ভঙ্গিতে রাস্তা দিয়ে চলে গেলো। হয়তো বাড়ি ফিরছে। গ্লাসে মাথা ঠেকিয়ে চোখ বুজে দীর্ঘশ্বাস ফেললো। হঠাৎ কাঁধের উপর হাতের ছোয়া পাওয়াই পেছন ফিরে দেখলো আইজাম দাঁড়িয়ে আছে৷ এক হাতে কোমড় জড়িয়ে ধরে ওকে নিজের দিকে ফিরিয়ে কাছে টেনে নিলো৷ আইজামের প্রশস্ত বুকে মাথা ঠেকিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করলো বিপর্ণা। মাথাটা বুকে চেপে ধরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ওকে কাঁদতে দিলো। এই কান্নাটা অনেকক্ষণ ধরে চেপে রাখা ছিলো।
অনেকক্ষণ কাঁদার পর ক্লান্ত বিপর্ণা আইজামের দেহের উপর ভার ছেড়ে দিয়ে মুখ তুলে জানতে চাইলো,
- উনি এখন কেমন আছেন?
- ভালো আছে।
- দেখতে দিবে?
- নাহ। অপারেশন শেষ হলো মাত্র। এখনো আইসিইউতে আছে। অবসার্ভেশনে রাখবে কয়েক ঘন্টা।

দু হাতে আইজামকে জড়িয়ে ধরে বিপর্ণা বললো,
- কীভাবে কি হলো এখনো বুঝতে পারছি না৷ আমি রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে ছিলাম। বাইকটা খুব স্পিডে আসছিলো। ধাক্কা লাগতে পারে ভেবে সাজিয়া ভাবী আমাকে টেনে নিচে নামালো। পা সামলে সামনে তাকাতেই দেখি বাইকটা আমাদের ছেড়ে বেরিয়ে গেছে। এইটুকু সময়ের মধ্যে কীভাবে ছু*রি মা*রলো?
- এসব নিয়ে আর ভেবো না। সাজিয়া এখন ঠিক আছে।
- ওরা ধরা পরবে না?
- কেস করা হয়েছে। তদন্তও চলছে।
- আইজাম?
- হুম।
- আমার মনে হচ্ছে ওরা আমাকে ছু*রি মা*রতে চেয়েছিলো।

বিপর্ণাকে নিজের থেকে আলাদা করে সামনে দাঁড় করিয়ে অনুসন্ধানী চোখে চেয়ে আইজাম জানতে চাইলো,
- এমন কেনো মনে হচ্ছে?
- আমাকে সরাতে গিয়ে সাজিয়া ভাবী আমার স্থানে দাঁড়িয়ে পরেছিলো। ঘটানাটা এতো দ্রুত ঘটেছে যে বাইকের পেছনে বসা ব্যক্তিটি ভাবতেই পারেনি শেষ মুহুর্তে আমি ওভাবে সরে যাবো। রাস্তার দিকে পিঠ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম। বাইক দেখতে পেয়ে দ্রুত সরে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিলো না। যদি না সাজিয়া ভাবী আমাকে টান দিতো।

অলীককায়াWhere stories live. Discover now