৪৭
অনেকদিনের অন্যাভাসে সিড়ি ভেঙে উপরে উঠতে উঠতে হাঁপিয়ে গেলো। গন্তব্যের দেখা পেতেই রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে খাটো হয়ে আসা শ্বাস সামলে নিচ্ছিলো বিপর্ণা। পকেট থেকে রুমাল বের করে আলতো হাতে ওর কপালে জমে থাকা সুক্ষ্ম ঘামের ফোটা মুছে দিয়ে আইজাম বললো,
- সকালের ব্যায়াম এখানেই হয়ে গেলো। কষ্ট করে জগিং করা লাগবে না।
- এতো সকালবেলা কেউ আরেকজনের বাড়িতে যায়? উনারা ঘুম থেকে উঠেছে কিনা কে জানে! সিড়ি বেয়ে চারতলায় উঠতে উঠতে আমার পা ব্যথা হয়ে গেলো৷
ঠোঁট উল্টিয়ে মুখ ফুলিয়ে বললো বিপর্না৷ কিন্তু উত্তরে আইজাম কিছু না বলে কলিংবেল চাপলো।
এতো সকালবেলা কলিংবেলের শব্দে বিরক্তির থেকেও বিস্মিত হলো। বাইরে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলো, এমন সময় কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে কে এলো কে জানে! ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পাশের ঘরের দরজার দিকে উঁকি দিয়ে দেখলো। নাহ, দরজাটা এখনো বন্ধ৷ কলিংবেলের কর্কশে শব্দেও সে বিন্দুমাত্র রা করেনি। জগতের কোনোকিছুতেই যেনো ওর কিছু আসে না। হতাশ হয়ে সেদিক থেকে চোখ ফিরিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো। দরজার ওপাশে আইজাম ও বিপর্ণাকে দেখে চক্ষুচড়ক গাছ। এ বাড়িতে এর আগে কয়েকবার আইজাম এলেও বিপর্ণাকে কখনো দেখা যায়নি। নিত্য জীবনের তিক্ততা ঝেড়ে ফেলে হানানের মুখে বিস্তৃত হাসি দেখা গেল।
- ম্যাডাম যে! কী সৌভাগ্য আমার। আসুন, আসুন।
দরজা ছেড়ে একপাশে দাঁড়াতে ওরা দুজন ভেতরে প্রবেশ করলো। আইজাম যখন আগেরবার এসেছিলো তখন এই ফ্ল্যাটের চেহারা ছিলো অবর্ণনীয় কুৎসিত। এখন চারপাশ পরিপাটি দেখে বুঝতে অসুবিধা হলো না, গৃহকর্ত্রী ফিরে এসেছে।
ড্রয়িংরুমের সোফায় গা এলিয়ে দিয়েছে বিপর্ণা। এদিকে হানান ছুটোছুটি করছে অতিথি আপ্যায়নের উদ্দেশ্যে। তা দেখে আইজাম বললো,
- তোমাকে কিছু করতে হবে না। আমরা নাস্তা সেরে তবেই এসেছি। যদিও এতো সকালে আসা উচিত হয়নি।
- ছি: ছি: এমন বলবেন না স্যার। যখন ইচ্ছে আসতে পারেন। ম্যাডাম প্রথমবার আমাদের বাড়িতে এলো কিছু না খাইয়ে ছাড়ছি না।
YOU ARE READING
অলীককায়া
Romanceবিপর্ণার ফ্রেশ হতে সময় লাগলো আধাঘন্টা। শাড়ি পাল্টে হলুদ রঙের সুতি সালোয়ার কামিজ গায়ে জড়িয়েছে। অভ্যাসবশত ভেজা চুলগুলো মুছতে মুছতে বেরিয়ে এলো ওয়াশরুম থেকে। কিন্তু চোখের সামনে আইজামকে দেখে মনে পরলো সে এখন নিজের বাড়িতে, নিজের ঘরে নেই। ভেজা লম্বা চুলে হ...