২৩
দুজন মানুষের ছোট্ট সংসার। গুছিয়ে নিয়েছে নিজের মতো করে৷ সারাদিন ব্যস্ত থাকায় মার্কেটে যেতে হয়েছে রাত্রিবেলা। দুটো বেতের সোফা, টি টেবিল কিনেছে হলরুমের জন্য। আইজামের স্বল্প বেতন অনুযায়ী কমদামের মধ্যে ভালো জিনিসপত্র কেনাকাটার চেষ্টা করেছে বিপর্ণা। যতোটুকু না হলেই নয়। কেনাকাটা শেষে বিপর্ণা বললো,
- বাকি যা লাগবে পরের মাসে কিনে নিবো।
- তোমার কেনাকাটা এখনো বাকি।
- আমার আবার কীসের কেনাকাটা?
- ড্রেসেস, বিউটি প্রোডাক্টস, চকলেট, আইসক্রিম যেগুলো লাগে আরকি।
- এখন কিছু লাগবে না। যেগুলো আছে সেগুলো দিয়েই হয়ে যাবে।
- সালোয়ার কামিজ পরে রাতে ঘুমাতে পারো না। একটা পালাজ্জো, টি শার্ট সাথে নিয়ে এসেছো। শ্যাম্পু, ফেসওয়াশ, ময়েশ্চারাইজার, সানস্ক্রি ম কিছুই সাথে নিয়ে আসো নি৷ তোমার পড়ার টেবিলের ড্রয়ারে একটা চকলেট বক্স ছিলো৷ তারমানে চকলেট তুমি সবসময় সাথে রাখো। এগুলো তোমার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, সুকু। যা কিনে দিতে আমি বাধ্য। যা যা লাগবে নির্দ্বিধায় কিনো৷
- আপনার কাছে কি টাকার গাছ আছে?
- মানে?
- আমার একটা সানস্ক্রিম কিনতে দু হাজার টাকা চলে যাবে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যদি আজকে কেনা শুরু করি, আপনার বেতনের পুরোটা টাকা শেষ হয়ে, ধারও করতে হতে পারে৷ এটা আমার দায়িত্ব, ওটা আমার দায়িত্ব না বলে নিজের বাজেট অনুযায়ী কথা বলুন।সোফার সেটটি গাড়িতে তুলে দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দিয়ে বিপর্ণার হাত ধরে শপিংমলের সামনে নিয়ে গিয়ে বললো,
- কি কি লাগবে কিনে নেও। বাজেটের চিন্তা তোমাকে করতে হবে না।বিপর্ণারও জেদ চেপে গেলো। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সব কিনতে শুরু করলো। একটা করে শপিং ব্যাগ নিয়ে আইজামের হাতে তুলে দিয়ে আরেক শপে চলে যায়। বেচারা আইজাম তিন ঘন্টা বউয়ের পেছনে পেছন পুরো শপিংমল কয়েক চক্কর দিয়ে ফেলেছে। বিপর্ণার জায়গায় অন্য কেউ হলে এতোক্ষণে তুলে আছাড় মারতো নিশ্চিত।
বিপর্ণা ভেবেছিলো আইজাম বিরক্ত হয়ে ওকে থামিয়ে দিবে। ছেলেরা সচরাচর মেয়েদের সাথে শপিং এ যেতে চায় না। একটা জিনিস কিনতে মেয়েরা কমপক্ষে দশখানা দোকান ঘুরবে। যা ছেলেদের স্বভাববিরুদ্ধ। তাই শপিংয়ে গেলে ছেলেরা অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠে। আইজাম কিছু বলছে না দেখে বিপর্ণা ভাবতে লাগলো আর কি কি কেনা বাকি আছে? যতোক্ষণ না আইজাম থামতে বলছে, ও থামবে না। দরকার পরলে দুটোর জায়গায় দশটা পালাজ্জো কিনে বাড়ি ফিরবে। আরেকবার ড্রেস কিনতে যেতে দেখে আইজাম পথরোধ করে দাঁড়িয়ে বললো,
- যা কিছু বাকি আছে অনলাইনে অর্ডার করে নিও। অনেক রাত হয়েছে। আজকে ফিরে যাই চলো।
YOU ARE READING
অলীককায়া
Romanceবিপর্ণার ফ্রেশ হতে সময় লাগলো আধাঘন্টা। শাড়ি পাল্টে হলুদ রঙের সুতি সালোয়ার কামিজ গায়ে জড়িয়েছে। অভ্যাসবশত ভেজা চুলগুলো মুছতে মুছতে বেরিয়ে এলো ওয়াশরুম থেকে। কিন্তু চোখের সামনে আইজামকে দেখে মনে পরলো সে এখন নিজের বাড়িতে, নিজের ঘরে নেই। ভেজা লম্বা চুলে হ...