ষষ্ঠদশ পর্ব

57 1 0
                                    

ঘরে বিটকেল প্রকৃতির একটা জামাই থাকলে শত্রুর দরকার পরে না। সে কথা হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছে বিপর্ণা। গরম তেলে লুচি ছেড়ে দেওয়ার সাথেই ছ্যাঁত শব্দ করে উঠেছে। পাশে দাঁড়িয়ে লুচি বেলতে থাকা আইজামের মুচকি হাসি চোখে পরা মাত্র বিপর্ণার মেজাজটাও এমন ছ্যাঁত করে উঠছে৷ এতোক্ষণ নীরবে সহ্য করলেও এবার লুচিটা উল্টে দিয়ে কোমড়ে হাত রেখে ঘুরে দাড়িয়ে অগ্নিশর্মা দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললো,
- এভাবে হাসছেন কেনো?

আইজাম যেনো আকাশ থেকে দপ করে পরে গেলো এমন ভাবখানা করে উল্টো প্রশ্ন করলো,
- হাসছি কোথায়?
- তখন থেকে মিটিমিটি হাসছেন।

বিপর্ণার ফুলকো গাল দুটো টেনে দিয়ে বললো,
- তোমার গলার নিচে লাভবাইটটা অনেক আকর্ষণীয় লাগছে। ভাবছি প্রতিদিন ঐ জায়গায় একটা লাভবাইট এঁকে দিবো। 

চকিতে নিজে গলার নিচে তাকালে বামপাশের বিউটিবোনের পাশে লালচে ক্ষত দেখতে পেলো। ওড়না দিয়ে ঢেকে দিয়ে চিৎকার করে উঠলো।
- অসভ্য মানুষ। নিজের অপকর্মের কথা গর্বের সাথে বলতে লজ্জা করছে না?
- মোটেও না৷ নিজের সৌন্দর্য তুমি উপলব্ধি করতে পারছো না। যদি পারতে তাহলে এতো নিখুঁত শিল্পকর্মের জন্য আমাকে ধন্যবাদ জানাতে৷ রোজ নিজে থেকে এসে বলতে, ওগো প্রিয়তম আমার গ্রীবাদেশে আপনার দন্তের শিল্পকর্ম প্রদর্শন করে আমাকে ধন্য করুন।

স্বাভাবিকভাবে বলে লুচি তৈরিতে মনোযোগ দিলো আইজাম। দাঁত কিড়মিড় করে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করে বিপর্ণাও নিজের কাজে মনোযোগ দিলো। ঠোঁটকাটা, বেহায়া লোকটাকে কিছু বলে লাভ নেই। আপনমনে গজগজ করতে ভুললো না।
- রাক্ষস একটা। লাজ লজ্জার বালাই নেই। রোজ আপনার কাছে যেতে আমার বয়েই গেছে। ভোরবেলা উঠে গোসল করো, শরীরে দাগ নিয়ে ঘুরো৷ আর উনি সেই সকাল থেকে মজা নিচ্ছেন।
- বাহ রে! এখন আমার একার দোষ৷ তুমি নিজে যেনো কিছুই করোনি। চুল টেনে আমার অর্ধেক চুল উঠিয়ে ফেলেছো।
- আর একটা বাজে কথা বললে, আপনার মাথার সব চুল কেটে ফেলবো আমি।
- তখন টানবে কি?
- আইজাম, আপনি চুপ করবেন?
- যথা আজ্ঞা।

আইজাম যখন অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অভ্যাস মতো বিপর্ণার কপালে চুমু দিয়ে বললো,
- আসছি। মনে করে আফরার সাথে কথা বলে নিবে।
- থাকুক না আইজাম। ট্রান্সফার নেওয়া অনেক ঝামেলার।
- সেসব আমি দেখে নিবো। আল্লাহ হাফেজ।
- আল্লাহ হাফেজ।

অলীককায়াWhere stories live. Discover now