ত্রয়োবিংশ পর্ব

41 1 0
                                    

৪১

নির্মল স্বচ্ছ বাতাসে দুলছে গাছের পাতা। জানালার পাশের আম গাছের পাতার সাথে পাতার ঘর্ষণে মৃদু ঝমঝম আওয়াজ হচ্ছে। সেই আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেলো রুমার। কয়টা বেজেছে কে জানে! আজ অনেক বেলা করে ঘুম থেকে উঠছে সে। সারারাত জেগে আশেপাশের দর্শনীয় স্থানের খোঁজ করে ঘুমাতে গেছে নামাজের পর। ক্লান্ত শরীরটাকে বিছানা থেকে টেনে তুলে ফ্রেশ হয়ে বাইরে এসে দেখলো বিপর্ণা কিচেনে কাজে ব্যস্ত। সেদিকে না গিয়ে ডাইনিং টেবিলে বসে বিপর্ণার উদ্দেশ্যে বললো,
- আজকে উঠতে অনেক দেরী হয়ে গেলো। আমি কিন্তু রোজ ভোরবেলায় উঠে পরি।

তুলে রাখা নাস্তাগুলো রুমার সামনে দিয়ে বিপর্ণা আলতো হাসলো।
- সে আমি জানি আপু। আপনাদের বাড়িতে যখন ছিলাম  তখনি খেয়াল করেছি।
- একদিনে অনেক কিছু খেয়াল করেছো। আর কিছুদিন থাকলে পুরোটা জানতে পারতে। এজন্য তোমার জামাই তাড়াতাড়ি বউ নিয়ে পালিয়ে এলো।
- কি জানতে পারতাম?
- এই তো আমাদের আরকি। আর কিছুদিন থাকলে আমাদের সবাইকে চেনা জানা হয়ে যেতো।

রুমা মুচকি হেসে নাস্তা খাওয়ায় মনোযোগ দিলো। সন্দিহান বিপর্ণা ক্ষণকাল রুমার দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে থেকে জানতে চাইলো,
- চা করে দিবো?
- কফি থাকলে এক কাপ ব্ল্যাক কফি দাও। উইথ সুগার। আমি আবার চিনি ছাড়া খেতে পারি না।

অনার্স ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা শেষে বন্ধুরা সবাই মিলে প্ল্যান করলো কক্সবাজার ঘুরতে যাবে। মোটামুটি সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও রুমা বাড়ি থেকে অনুমতি পেলো না। মেয়ের আবদার শুনে রওশনারা বললেন,
- এতো দূরের পথ একলা যাওয়ার দরকার নেই।
- একলা কোথায়? বন্ধুরা মিলে যাচ্ছি। সবাই মিলে পনেরো জন।
রুমা নিজ সিদ্ধান্তে অনড়। সে যাবেই।

- সেটা আরও বেশি সমস্যা। কয়েকটা উঠতি ছেলে মেয়ে অভিভাবক ছাড়া এতো দূরের যাওয়া শোভনীয় নয়। তাছাড়া দিনে গিয়ে দিনে চলে আসলে সেটা আলাদা কথা। পাঁচদিন এভাবে বাড়ির বাইরে থাকার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।
- আমার ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। কিন্তু ঝুমা যখন যেটা আবদার করতো তখন ঠিকই মেনে নিতে। ভুল সঠিক সবকিছুই তুমি সম্ভব করে দেখিয়েছো। আমার সাথে তুমি সব সময় এমন করো।
- অযথা ঝামেলা করিস না রিমঝিম। আমি অনুমতি দিলেও তোর বাবা দিবে না। তার সাথে গিয়ে কথা বল। যা।
- ঝুমার বেলা বাবাকে লুকিয়ে তোমরা মা মেয়ে কম কাহিনী করোনি। আমার বেলা, যাও তোমার বাবার কাছে যাও।

অলীককায়াWhere stories live. Discover now