২১
আইজামের ঘরটা খুব সাধারণ। ছোট সাইজের বিছানা, টেবিল, চেয়ার, আলমারি, ড্রেসিংটেবিল ছাড়া আর কিছু নেই। রাতের খাবার খেয়ে দশটা বাজতে আইজাম বলেছিলো,
- শোনো সুকু, এখন থেকে তুমি যেহেতু আমার সাথে এখানে থাকবে তাই কিছু নিয়মকানুন তোমাকে জানিয়ে দেই৷ আমি সচরাচর খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পরি, উঠি ভোরবেলা। খাওয়াদাওয়া বেশিরভাগ সময় বাইরে করতাম। তবে রান্নাবান্নাও টুকটাক পারি৷ তুমি ভালোমন্দ যাই রান্না করো না কেনো, চুপচাপ খেয়ে নিতে পারবো। বাড়িতে এতোদিন আমি একাই থাকতাম। ঘরের যাবতীয় কাজ নিজে করেছি। তোমার কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হলে আমাকে বলতে পারো। কিন্তু কাজের লোক রাখা আমার পক্ষে সম্ভব হবে না। কোনো কাজ না পারলে রেখে দিবে, আমি এসে করে দিবো। বাজার সদাই, কেনাকাটার প্রয়োজন হলে আমার সাথে মার্কেটে যাবে কিন্তু একা বাইরে বের হওয়া যাবে না।
- কেনো? বিয়ে করেছেন বলে আপনার বন্দী হয়ে থাকতে হবে?
- অচেনা জায়গায় একা বের হওয়া অনেক রিস্কি৷ আইনের মানুষদের অনেক ধরনের শত্রু থাকে। আমার একমাত্র পরিবার তুমি। তাই তোমাকে তার্গেট করতে পারে। তুমি এখন আমার দায়িত্ব। তোমার বাবা মায়ের থেকে বড় মুখ করে তোমাকে চেয়ে এনেছি। তোমার যাবতীয় চাহিদা পূরণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিয়ে করেছি। সে প্রতিশ্রুতি রাখতে তোমার সাহায্য প্রয়োজন হবে। জেদ করে এমন কিছু করোনা, যাতে আমাকে ছোট হতে হয়৷
- তার মানে খুব প্রয়োজনীয় মুহুর্তেও আমাকে আপনার অপেক্ষায় থাকতে হবে। কখন আপনার সময় হবে সেই অপেক্ষা বসে থাকবো৷
- ইমারজেন্সি সিচুয়েশনের ক্ষেত্রে আমাকে ইনফর্ম করলেই হবে। কোথায় যাচ্ছো, কেনো যাচ্ছো এইটুকু জানাতে নিশ্চয়ই অসুবিধা নেই?
- কীসের অসুবিধা? বিয়ে করে নিজের স্বাধীনতা বিকিয়ে দিয়েছি কিনা! স্বামীর অনুমতি ছাড়া আদর্শ স্ত্রীর নিঃশ্বাস নেওয়াও বারণ। আপনার কথাতে উঠবো, আপনার কথাতে বসবো তবেই না আমি আদর্শ বউ৷আলোচনার মাঝে মেজাজ দেখিয়ে উঠে এলো বিপর্ণা। আজকাল সবকিছুই বিরক্ত লাগছে৷ সবথেকে বিরক্ত লাগে আইজামের স্বাভাবিক আচরণ। যেনো কতোদিনের চেনা! ঘরে এসে নিজের লাগেজটা খুলে নিজের কাপড়গুলো গুছাতে শুরু করলো। এমনিতেই আলমারির বেশিরভাগ জায়গা ফাঁকা। খুব বেশি কাপড় নেই আইজামের। বিছানায় বসে ওকে মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে দেখছে আইজাম। বিপর্ণার বেপরোয়া আচরণে কষ্ট পেলেও সেটা বুঝতে দিলো না। শুধু অপলক চেয়ে রইলো। কাপড় গোছানো শেষ হলে বিপর্ণা পেছন ফিরে আইজামের সামনে এসে দাঁড়ালো। একহাতে পালাজ্জো অন্য হাতে ঢোলা টি শার্ট ধরে আইজামকে দেখিয়ে বললো,
- আমি কি এগুলো পরতে পারি? এই গরমে সালোয়ার কামিজ পরে ঘুমাতে অসুবিধা হয়।
- বাড়ির ভেতরে তোমার যা ইচ্ছে পরতে পারো। বাইরে গেলে আশা করি শালীনতা বজায় রাখবে।
YOU ARE READING
অলীককায়া
Romanceবিপর্ণার ফ্রেশ হতে সময় লাগলো আধাঘন্টা। শাড়ি পাল্টে হলুদ রঙের সুতি সালোয়ার কামিজ গায়ে জড়িয়েছে। অভ্যাসবশত ভেজা চুলগুলো মুছতে মুছতে বেরিয়ে এলো ওয়াশরুম থেকে। কিন্তু চোখের সামনে আইজামকে দেখে মনে পরলো সে এখন নিজের বাড়িতে, নিজের ঘরে নেই। ভেজা লম্বা চুলে হ...