সপ্তবিংশ পর্ব

133 2 0
                                    

৪৬

সম্পর্ক উষ্ণ থাকে দু পক্ষের প্রচেষ্টায়। একার পক্ষে কতোদূর আর আগানো যায়। বিপর্ণা আজকাল আনমনে দিন কাটায়। কলেজ যাচ্ছে, সংসারের কাজ করছে, আইজামের ডাকে সাড়া দিচ্ছে। কিন্তু নিজে থেকে আইজামের ধারের কাছে খুব একটা ঘেঁষে না। অফিশিয়াল কাজে ব্যস্ত থাকলেও ঘরের বউয়ের দিকে আইজামের নজর সদা সচেতন। পারলে বউয়ের পেছন পেছন শাড়ির আঁচল ধরে ঘুরে। আজকে থানা থেকে ফেরার সময় একটা ফুল গাছের চারা নিয়ে হাজির। তা দেখে মুখ কুচকে বিপর্ণা বললো,
- এটা আবার কেনো?

- সেদিন তুমি জানতে চেয়েছিলে না, বাড়ির সীমানায় কোন ফুল লাগানো ঠিক হবে? তাই নিয়ে এলাম।

- অচেনা লাগছে।

- এর নাম রসুনলতা। একাই পুরো এরিয়া কভার করে ফেলতে পারবে। বেগুনি রঙের ফুলে চারপাশ ভরিয়ে তুলে।

- রসুনলতা! মশলার নাম?

- আরেকটা নাম আছে অবশ্য৷ লতা পারুল।
একেকজন একেক নামে ডাকে। চলো গাছ দুটো দরজার দু পাশে লাগিয়ে দেই৷

উচ্ছ্বাসহীন মুখে বিপর্ণা এগিয়ে গেল। রাতে যখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল বাঁধছিলো, আইজাম জড়িয়ে ধরলো পেছন থেকে। প্রতিবিম্বে দৃষ্টি বিনিময় করে জানতে চাইলো,
- তোমার মন খারাপ?

উদাস বিপর্ণা উত্তরহীন চেয়ে রইলো।
- মন খারাপ কেনো?

- মন খারাপ লাগলে আমি কি করবো? 

- তুমি অযথা মন খারাপ করছো।

- অযথা? নিজেকে সবসময় লুকিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছিলাম ভবিষ্যৎ স্বামীর জন্য। আর সে কিনা তখন অন্য মেয়ের প্রেমে মগ্ন। সেসব গল্প শুনে যখন আমার মন খারাপ হচ্ছে, আপনি বলছেন অযথা!

- আমাদের মধ্যে কখনো প্রেমের সম্পর্ক ছিলো না। উঠতি বয়সে হয়তো সামান্য মায়া জন্মেছিলো। যা কখনো প্রস্ফুটিত হয়নি। 

- এখন যদি আমার এমন এক অপ্রস্ফুটিত অনুভূতির গল্প আপনার সামনে আসে। কেমন লাগবে? 

- তুমি দুটো ভিন্ন পরিস্থিতির তুলনা করছো। 

- এতো হিসাব কষে কথা বলবেন না। মন এসব হিসাবকিতাব বুঝে না। অনুভূতি বরাবর বেপরোয়া।

অলীককায়াWhere stories live. Discover now