হালকা নীলচে আলোয় ঘরের চেনার পরিবেশ রহস্যময় হয়ে উঠে। আলো আধারীতে রেহবারের ঘুম ভালো হয়। ছোটবেলা থেকেই একদম অন্ধকারে ঘুমাতে পারতো না। ঘরে আলো জ্বেলে ঘুমাতো। ও ঘুমিয়ে গেলে আম্বিয়া খাতুন ছেলের ঘরে এসে লাইট নিভিয়ে দিয়ে যেতো। রেহবার এখন বড় হয়েছে, আম্বিয়া খাতুনেরও বয়স হয়েছে। সিঁড়ি বেয়ে উঠানামা খুব কম করেন। তাছাড়া রেহবারের বাড়ি ফেরার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। কখনো বাড়ি ফিরতে ফিরতে মাঝ রাত হয়ে যায়। এখন সে ডীম লাইটের আলো জ্বালিয়ে রাখে সারারাত।
গভীর রাতে হঠাৎ করে রেহবারের ঘুম হালকা হয়ে গেলো। পাশ ফিরে শুতে গিয়ে দেখলো গুলিস্তা বিছানায় নেই। প্রথমে ভাবলো হয়তো ওয়াশরুমে গিয়েছে। চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করেও ঘুম এলো না। মনের মধ্যে খচখচ করছে। মিনিট পাঁচেক অপেক্ষা করার পর আবার চোখ খুলে নীলচে আলোয় ঘরের চর্তুদিকে নজর বুলিয়ে নিলো। ঘরের কোথাও দেখতে না পেয়ে উঠে বসলো। না চাইতেও মনের মধ্যে সন্দেহ ঘুরাঘুরি করে। কিছুটা একটা ঠিক নেই, এই ভাবনা থেকেই আজকাল রেহবার সতর্ক চোখে সবকিছু নিরীক্ষণ করলো।
বেড টেবিলের উপর গুলিস্তার মোবাইল রাখা। ওয়াশরুম চেক করে সেখানেও গুলিস্তাকে পাওয়া গেলো না। বাইরে তখন ঘুটঘুটে অন্ধকার। হলরুমে দেখবে ভেবে ঘর ছেড়ে বের হতে গিয়ে কি যেনো মনে করে ব্যালকনির দিকে এগিয়ে গেলো। ব্যালকনির দরজা খুলতেই ঘরের হালকা নীল আলোয় অন্ধকার কেটে গুলিস্তার অবয়ব ভেসে উঠলো। গ্রীল ধরে এপাশে পিঠ করে দাঁড়িয়ে আছে। দৃষ্টি আকাশে ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদের দিকে। রেহবার সাবধানে গিয়ে ওর পাশে দাঁড়ালো। হঠাট কারো উপস্থিতিতে ভয় পেতে পারে ভেবে ধীর কন্ঠে ডাকলো,
- ফুল?
গুলিস্তা ভয় পেলো না। বরং স্বাভাবিক ভাবেই পাশ ফিরে তাকালো। ততোক্ষণে ব্যালকনির দরজা বন্ধ হয়ে চারদিক অন্ধকারে ছেয়ে গেছে। মৃদু চাদের আলোয় আবছা অবয়ব ছায়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। তবুও ওরা একে অপরের দিকে চেয়ে রইলো।
- তুমি এখানে কি করছো?
- ঘুম আসছে না।
- আমাকে ডাকতে। এভাবে একা একা অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকতে ভয় লাগছে না?
YOU ARE READING
হে সখা
Romanceএকবার দেখেই বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলো রেহবার ও গুলিস্তা। বিয়ের পর সব ঠিকঠাক চললেও গুলিস্তার নির্লিপ্ততা, অস্বাভাবিক ঠান্ডা আচরণ রেহবারের মনে গাঢ় সন্দেহের জন্ম দেয়। ভালো মন্দ সব পথ অবলম্বন করে মূল কারণ উদ্ধারের চেষ্টায় সামনে আসে গুলিস্তার অতীত। যা...