30

32 1 0
                                    


ফজরের নামাজের পর সায়ীদা জামান ও আম্বিয়া খাতুন বারান্দায় বসে চা পান করছেন। ভোরের স্নিগ্ধ সময়টাতে বারান্দায় বসে কাটাতেই ভালো লাগে। সকালের বাতাসে কিছু একটা আছে যা গা ঝরঝরে করে। সায়ীদা জামানের কাপে গ্রিন টি। বেশ স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ তিনি। আম্বিয়া খাতুনের আবার দুধ চা ছাড়া চলে না। তিনি বেশ আয়েশ করে চিনি যুক্ত দুধ চায়ে চুমুক দিলেন। নিরবতা ভেঙে সায়ীদা জামান বললেন,
-  রেহবারের ব্যাপারে কি ভাবলে আম্বিয়া?

আম্বিয়া খাতুন ঘাড় ঘুরিয়ে সায়ীদা জামানের দিকে তাকালেন। উনার মনোভাব বুঝার চেষ্টা করছেন। তিনি কি কোনোভাবে বিরক্তবোধ করছেন? নিজ সংসারে অযাচিত উপস্থিতি কেউই বেশিদিন সহ্য করতে পারে না। মেহমান বড়জোর সপ্তাহখানিক ভালো লাগে। এরপর হাঁসফাঁস লাগা স্বাভাবিক। চেহারায় কোনোরকম বিরুপ প্রতিক্রিয়া খুঁজে না পেলেও বিচক্ষণ আম্বিয়া খাতুন বললেন,
-  গুলিস্তার সমস্যা যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে পুষে রাখা, তাই চিকিৎসার প্রসেস একটু লং। বছরখানেক এখানে থাকতে হচ্ছে। নতুন অফিসের কাছাকাছি কোনো ফ্ল্যাট দেখে ওরা দ্রুত শিফট করে নেবে।

চায়ের কাপে চুমুক দিতে গিয়ে আম্বিয়া খাতুনের কথায় অবাক হয়ে মাঝপথে থেমে রইলেন সায়ীদা জামান। গলার স্বর খানিকটা উঁচু করেই বললেন,
-  তুমি কি পাগল হয়েছো আম্বিয়া? আমি কি এসব জানতে চেয়েছি! রেহবার আমাদের ঘরের ছেলে। ওর এখানে থাকতে ইচ্ছে করলে এক বছর কেনো, দশ বছর থাকবে। ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়ার কথা আসছে কেনো? আমার বয়স হয়েছে। এ সময় একলা বাড়িতে থাকতে ভয় লাগে, দমবন্ধ অনুভূতি হয়। তোমরা আছো বলে একটু স্বস্তিতে আছি। কয়েকদিন আগেও অসুস্থ হয়ে বিছানায় পরে থাকতাম। আজ এই অসুখ তো কালটা আরেকটা। এখন দেখো, কেমন হেসেখেলে দিন কেটে যাচ্ছে৷

-  না মানে হয়েছে কি ভাবি, ওদের সুবিধা অসুবিধার একটা ব্যাপার আছে না। রেহবার এখানে থাকতে চাইছে না। অফিসে যেতে আসতে অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়। গুলিস্তাকে নিয়ে সারাক্ষণ চিন্তিত থাকে। তাই অফিসের কাছাকাছি থাকতে চাইছে।

হে সখাWhere stories live. Discover now