9

32 1 0
                                    

হাতে ধরে থাকা আরণ্যক বইটি পড়া শেষ হয়েছে কিছুক্ষণ আগে। এতোক্ষণ বইয়ের পাতা উল্টিয়ে চুম্বকাংশগুলো আরেকবার পড়ে দেখছিলো। সেগুলোও পড়া শেষ হয়ে গেলে বইটি বেড টেবিলে রেখে ঘড়ির দিকে তাকালো। রাত প্রায় একটা বাজতে চললো। রেহবার এখনো বাড়ি ফিরেনি। এদিকে অপেক্ষা করতে করতে গুলিস্তা পর পর দুটো উপন্যাস পড়ে ফেলেছে। একটানা পড়ার কারনে মাথাটা ভীষণ ধরেছে,প্রচন্ড যন্ত্রণা করছে। এখন আর বই সামনে নিয়ে বসে থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু এভাবে বসে থাকলে এক্ষুণি ঘুমিয়ে পরবে। স্বামী বাড়িতে ফিরেনি অথচ সে ঘুমিয়ে পরেছে এ কথা মায়ের কাছে পৌছালো, ওকে আস্ত রাখবে না। গুলিস্তা হাই তুলতে তুলতে কিচেনের দিকে গেলো। সকালের জন্য পরোটার ডো বানিয়ে রাখলে কাজও এগিয়ে যাবে, সময় কাটবে। এক কাপ চা খেলে মাথা ব্যথাটা কমে যেতো। কিন্তু এখন চা খেলে আবার ঘুম কেটে যাবে। ঘুমের ব্যঘাত ঘটলে সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরী হবে। সবদিক বিবেচনা করে আর চা বানালো না।
রেহবার ফিরলো কিছুক্ষণ পর। স্বাভাবিক ভাবে বাড়িতে প্রবেশ করে গুলিস্তাকে রান্নাঘরে দেখে বললো,
- এতো রাতে রান্নাঘরে কি করছো? ঘুমাওনি কেনো এখনো?
- সকালের জন্য কিছু কাজ গুছিয়ে রাখছিলাম। আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন, টেবিলে খাবার দিয়ে দিচ্ছি।

স্বাভাবিকভাবেই কথাগুলো বলে নিজের কাজে মনোযোগ দিলো। রেহবার ভেবেছিলো ওর দেরীতে বাড়ি ফেরা নিয়ে গুলিস্তা অন্তত প্রশ্ন করবে। সেজন্যই তো ইচ্ছে করে অফিস থেকে দেরী করে বাড়ি ফিরলো। নাহ, এই মেয়ে এতো সহজে পথে আসবে না। শুধু শুধু এতোক্ষণ অফিসে বসে পিঠের ব্যথা ধরালো। রেহবারের মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেলো।

খেতে বসে রেহবার এক হাতে ফোন ধরে রেখেছে। খুব মনোযোগ দিয়ে কিছুটা একটা দেখছে আর মিটিমিটি হাসছে। এদিকে মাথা ব্যথার কারনে গুলিস্তা কিছু খেতে পারছে না। প্লেটের খাবার নাড়াচাড়া করে যাচ্ছে। রেহবারের খাওয়া শেষ হলে সে উঠে যাবে। সবকিছু দ্রুত গুছিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিতে পারলেই শান্তি। কিন্তু রেহবারের খাওয়া শেষ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। সে ফোনে মুখ গুঁজে কোনোরকম দু চারটে ভাত মুখে তুলছে। এভাবে খেতে থাকলে রাত পার হয়ে যাবে তবুও প্লেটের খাবার শেষ হবে না। আর সহ্য করতে না পেরে গুলিস্তা টেবিল ছেড়ে উঠে পরলো। তা দেখে রেহবার ফোন হতে চোখ তুলে চাইলো।
- খাওয়া শেষ? কিছুই খেলে না দেখছি। প্লেটে খাবার ওভাবেই পরে আছে।

হে সখাWhere stories live. Discover now