39

23 0 0
                                    


সারারাত দুজনের কারোরই চোখ জুড়ে  ঘুম এলো না। বিছানায় এপাশ ওপাশ করতে করতে রাত পেরিয়ে গেলো। চব্বিশ ঘন্টার এ দূরত্ব রেহবারের নিকট অন্ততকাল ঠেকছে। হাঁপিয়ে উঠেছে এ নীরব কলহে। নাস্তার টেবিলে নীরবে খাবার গ্রহণ করছিলো দুজনে৷ গুলিস্তার দিকে সরাসরি না তাকালেও রেহবার বুঝতে পারছে একটু পরপর গুলিস্তা ওর দিকে তাকাচ্ছে। এতো লুকোচুরি পছন্দ হলো না রেহবারের। চোখ তুলে সরাসরি গুলিস্তার দিকে তাকালো। গুলিস্তা তখন রেহবারের দিকেই তাকিয়ে। ধরা পরে যাওয়ায় হকচকিয়ে দৃষ্টি নামিয়ে নিলো। রেহবার কিন্তু চোখ নামিয়ে নিলো না। শান্ত চোখে কিছুক্ষণ চেয়ে রইলো। তারপর গায়ে হিম শীতল কন্ঠে প্রশ্ন করলো,
- বাচ্চা নিতে চাও না কেনো?

আবার সেই একই টপিক নিয়ে প্রশ্ন করায় গুলিস্তা ভারী বিরক্ত হলো। মুখে খাবার তুলতে থাকা হাতটি থেমে গেলো মাঝপথে। রেহবারের দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি মেলালো সেই শান্ত চোখে। অত:পর হাতের খাবারটি প্লেটে রেখে দিয়ে বললো,
- আমার পছন্দ না৷
- তোমার একার পছন্দের ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারো না। সন্তান আমাদের দুজনের, তাই সিদ্ধান্তটাও দুজন মিলে নেওয়া জরুরি।

গুলিস্তা কিছু বললো না৷ ওর শান্ত চোখে তাকিয়ে থাকা রেহবারকে ক্ষেপিয়ে তুললো।

- আমি বাবা হতে চাই। আমি চাই আমাদের ঘর আলো করে একটি ফুটফুটে সন্তান আসুক। এখন বলো, কি সিদ্ধান্ত নিবে তুমি?

গুলিস্তার কোনো তাড়া নেই। সে ধীরে সুস্থে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে আধখাওয়া খাবারের প্লেটটি তুলে নিলো। স্বাভাবিকভাবে বললো,
- আমার সিদ্ধান্ত বদলাবে না। তোমার সন্তান প্রয়োজন হলে আরেকটা বিয়ে করে তার সাথে মিলেমিশে বাচ্চা পয়দা করো।

এঁটো প্লেট নিয়ে চলে গেলো কিচেনে৷ ওর যাওয়ার পাণে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলো রেহবার। কি বলে গেলো মেয়েটা! এটা কি আদোও তার চেনা ফুল? হতেই পারে না। এতোটা ঔদ্ধত্য! এতোটা পরিবর্তন! কি করে মেনে নেওয়া যায়? বিস্ময়ে রেহবারের ভাষা হারিয়ে গেছে। ফোনে লিতুনের কল আসায় সে যাত্রায় ধ্যান ভাঙলো। দ্রুত বেরিয়ে গেলো অফিসের উদ্দেশ্যে।

হে সখাWhere stories live. Discover now