40

28 0 0
                                    

- বুঝলি তিতান, মানুষ বড্ড স্বার্থপর। সবাই শুধু নিজের কথা ভাবে, নিজের লাভ খোঁজে। রেহবারও শেষমেশ সেই তো নিজের কথাই ভাবলো, বল? মন চাইলো, বলে দিলো 'বাচ্চা চাই'। আমার তো চাই না। সেই কথা কি ভাবলো? ভাবলো না তো।

পানির বালতিতে এক ডুব দিয়ে ডানা ঝাপটে চতুর্দিকে পানি ছিটিয়ে দিলো তিতান। গোসল করতে সে ভীষণ পছন্দ করে। ওকে উৎফুল্ল দেখে মলিন হাসলো গুলিস্তা৷ পানির বালতি সরিয়ে রেখে ফ্লোর পরিষ্কার করে একটু আরাম করে বসতেই তিতান এসে বসলো ঘাড়ের উপর৷ ওর ভেজা পালক থেকে পানি গড়িয়ে পরে গুলিস্তার ব্লাউজ গেলো ভিজে। হায় হায় করে উঠলো গুলিস্তা।
- দিলি তো ভিজিয়ে! একটু আগেই শাড়িটা গায়ে জড়িয়ে ছিলাম।

তিতান আরেক দফা গা ঝাড়া দিলো। হতাশ হয়ে গুলিস্তা পেছনের দেয়ালে হেলান দিয়ে বললো,
- আমি কীভাবে বাচ্চা মানুষ করবো রে? আমি তো আমার মায়ের মেয়ে। তার মতো আমিও আমার বাচ্চাকে কষ্ট দিবো, তাই না? আমার মতোই একটা বাচ্চা ঘরের কোণে একলা কাঁদবে। কাঁদতে কাঁদতে কান্না ভুলে যাবে৷ উফঃ! কী যন্ত্রণা! বাচ্চারা কখন কি চায় কীভাবে বুঝবো বল? একটা বাচ্চা মায়ের আদর-যত্ন বিহীন বড় হবে৷ নরক যন্ত্রণা ভোগ করবে এটা আমি চাই না। তিতান, তুই কি বুঝতে পারছিস আমাকে? কেউ তো আমাকে বুঝতে চায় না রে। সবাই শুধু নিজের সিদ্ধান্ত আমার উপর চাপিয়ে দেয়। সেসব আমি বরাবর হাসি মুখে মেনে নিয়েছি। কিন্তু এবার আমার ভয় করছে রে।

-  তুমি ভয় পাচ্ছো? কীসের ভয়?

নিস্তব্ধ দুপুরে রেহবারের আকস্মিক কথা বলায় গুলিস্তার সারাদেহ কেঁপে উঠলো। মেয়েটা ভীষণ চমকেছে দেখে রেহবার নিজেও অপ্রস্তুত হলো। ফ্লোরে হাঁটু গেড়ে বসে গুলিস্তার দু বাহুতে হাত রেখে বললো,
- স্যরি, স্যরি। খুব চমকেছো?

নিজেকে ধাতস্থ করে নিয়ে গুলিস্তা উত্তর দিলো,
- ঠিক আছি।
- দরজা বন্ধ করার সময় বেশ জোরেই তো শব্দ হলো। তুমি শুনতে পাওনি?
- খেয়াল করিনি মনে হয়।
- তাই তো দেখছি। কি এতো কথা বলো তিতানের সাথে? আজকাল আমাকে সময়ই দেও না। কীসের ভয়ের কথা বলছিলে? কোনো সমস্যা?
- তেমন কিছু না। এমনিতেই তিতানের সাথে কথা বলছিলাম।

হে সখাWhere stories live. Discover now