আমার মেয়ে, আমার মেয়ে বলে চিল্লালেও কাজের বেলায় লবডঙ্কা। রিনাতের মতো করেই বাবার কাঁধে সকল দায়িত্ব পরেছে নিনাতের৷ ওই শুধু মেয়ের ক্ষুধা পেলে খাইয়ে দিয়ে গুলিস্তার দায়িত্ব শেষ। প্রথম কয়েকদিন ক্ষুধায় দিন রাত এক করে কান্নাকাটি করতো নিনাত। কৌটা দুধ গুলিয়ে খাওয়ানো হলো৷ তাতে পেট খাবার হয়ে সে আরেক কান্ড কাহিনী। অনেক খোঁজ খবর করে মেডিসিনের সাহায্যে গুলিস্তার বুকের দুধ নামানো হলো। ব্যাপারটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হলেও মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বিনাবাক্যে মেনে নিয়েছে গুলিস্তা৷
সেদিন বার্থ সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে গুলিস্তার সেকি কান্না। রেহবারের সাথে করা বাজে আচরণের জন্য আত্মগ্লানিতে শেষ হয়ে যাচ্ছিলো। গুলিস্তার বারবার মাফ চাওয়া দেখে বেচারা রেহবার নিজেও অস্বস্তিতে পরে গিয়েছিলো। তাছাড়া, রেহবার বরাবর গুলিস্তার কান্নারত মুখশ্রীর সামনে দুর্বল হয়ে পরে৷ রাগ, অভিমান, অভিযোগ সব তখনই হুড়মুড় করে ছুটে পালিয়েছিলো৷সেদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আম্বিয়া খাতুন নিজের ফোন হাতে নিয়ে বিমূঢ় হয়ে রইলেন৷ হোয়াটসঅ্যাপে রেহবারের মেসেজ এসেছে৷ একটা ছবি৷ রিনাতের পাশে ঘুমিয়ে আছে ছোট একটি শিশু। গায়ের লালচে রঙ, পাতলা চামড়া দেখেই অভিজ্ঞ আম্বিয়া খাতুন বুঝতে পেরেছেন এ কোনো সদ্য জন্মানো নবজাতক। এমন ছবি হঠাৎ কেনো পাঠালো রেহবার? তড়িঘড়ি করে ফোন লাগালেন৷
ভিডিওকলে রেহবারের হাস্যোজ্জ্বল মুখ। রিনাতকে খাবার খাইয়ে দিচ্ছিলো দাদীকে দেখতে পেয়েই রিনাত ছো মেরে ফোন ছিনিয়ে নিয়ে বললো,
- আমার বোনকে দেখেছো? কী সুন্দর না? বাবা ওর নাম রেখেছে রেহনুমা৷ তবে আমরা সবাই ওকে নিনাত বলে ডাকবো। আমার নামের সাথে মিলিয়ে, নিনাত।একমাত্র নাতির উচ্ছ্বাসের সামনে মন খারাপ আড়াল করলেন আম্বিয়া খাতুন। কপালে চিন্তার রেখে ওমনি রইলো। শুধু মুখে হাসি ফুটিয়ে বললেন,
- খুব সুন্দর নাম। রিনাত, নিনাত। নাম শুনেই বুঝা যাচ্ছে দু ভাই বোন।ছেলের হাত থেকে ফোন নিয়ে রেহবার বললো,
- তোমার খাওয়া শেষ হয়েছে। রুমে গিয়ে ব্রাশ করে শুয়ে পরো। বাবা দাদীমার সাথে কথা বলে আসছি।
YOU ARE READING
হে সখা
Romanceএকবার দেখেই বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলো রেহবার ও গুলিস্তা। বিয়ের পর সব ঠিকঠাক চললেও গুলিস্তার নির্লিপ্ততা, অস্বাভাবিক ঠান্ডা আচরণ রেহবারের মনে গাঢ় সন্দেহের জন্ম দেয়। ভালো মন্দ সব পথ অবলম্বন করে মূল কারণ উদ্ধারের চেষ্টায় সামনে আসে গুলিস্তার অতীত। যা...