27

26 0 0
                                    

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষটির একপাশে বিশালাকার জানালা। সেখান থেকে মস্ত বড় আকাশ দেখা যায়। ভূমিতে বিস্তৃত বালুরাশি। অনেক অনেক দূর পেরিয়ে সমুদ্রের নীল জলরাশি উঁকি দিচ্ছে। রেহবার অস্থিরভাবে রুমের এপাশ থেকে ওপাশে হাটাহাটি করে, জানালাটির সামনে গিয়ে স্থির হলো। ঘড়ির কাঁটা যেনো আজকে খানিক বিশ্রাম নিতে চাইছে। প্রতিটি মিনিট ঘন্টার সম পরিমাণ মনে হচ্ছে। ডা. রুবাইয়া রানুর ডেস্কের অপরপাশে একটি মনিটরের স্ক্রীনে হলরুমের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা যাচ্ছে। যেখানে গুলিস্তা ও ডা. রুবাইয়া রানুকে দেখা গেলেও তাদের মধ্যকার কথোপকথন শোনা যাচ্ছে না। জানালার একপাশে দাঁড়িয়ে রেহবার আড়াআড়ি ভাবে চোখ রাখলো স্ক্রীনের দিকে। গুলিস্তার অস্থিরভাবে  সিড়ির দিকে তাকানো, রেহবারের জন্য ওর প্রতিক্ষা রেহবারকে স্থির থাকতে দিচ্ছে না। ইচ্ছে করছে ছুটে গিয়ে ভীতু মেয়েটাকে বুকের মাঝে আগলে নিতে। ভয় কীসের আমি আছি তোমার পাশে। কিন্তু পাশে যাওয়া বারণ। রেহবারের পা দুটো যেনো নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই। কখন যেনো এই বদ্ধ কক্ষ ছেড়ে ছুটে যায় তার মুষড়ানো ফুলের কাছে বলা যাচ্ছে না। রেহবার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো। মেঘেরা উড়ে চলে যাচ্ছে দূর দেশে। ওদের ছুটে চলা দেখতে দেখতে সময় কেটে গেছে অনেকখানি। ক্লান্ত দৃষ্টি ফিরিয়ে স্ক্রীনের দিকে তাকাতেই মনে হলো কেউ বুকের ভেতর থেকে টান দিয়ে হৃদপিন্ড ছিনিয়ে নিলো। দরজা খুলে দ্রুত সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে গুলিস্তার কাছে চলে এলো। ততোক্ষণে রানু দু হাতে আগলে নিয়েছে ওকে। ফ্লোরে হাঁটু গেড়ে বসে গুলিস্তার বেদনাক্রান্ত করুন মুখটি দু হাতের মাঝে নিয়ে উদ্বিগ্ন কন্ঠে জানতে চাইলো ,
- কি হয়েছে ওর?

রানুর ডাকে ততোক্ষণে হাসপাতাল কতৃপক্ষ হতে ওয়ার্ডবয় স্ট্রেচার নিয়ে হাজির হয়েছে। এমন জটিল পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে অভিজ্ঞ রানু দিশেহারা হলো না।
- ওকে রুমে নিয়ে যেতে হবে। তেমন কিছু হয়নি। ডোন্ট প্যানিক।

রেহবার নিজেকে ধাতস্থ করে গুলিস্তাকে পাঁজাকোলে তুলে নিয়ে বললো,
- কোথায় নিয়ে যেতে হবে বলুন। আমি নিয়ে যাচ্ছি।

হে সখাWhere stories live. Discover now