44

20 0 0
                                    


হাসপাতালে থাকতে হলো মোটে তিনদিন৷ চতুর্থদিনে সব গুছিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলো। এই কয়েকদিন রেহবারের উপর দিয়ে অনেক ঝড় ঝাপটা বয়ে গেছে। ইভেন্টের ভেন্যুতে আর যাওয়া হয়নি৷ টিমের বাকিরা সেসব সামলে নিলেও ফোনে যাবতীয় তদারকি করতে হয়েছে রেহবারকে। গুলিস্তার ঔষধ, বিভিন্ন টেস্ট, খাবারদাবার ইত্যাদির পিছনে ছুটতে হয়েছে। ছেলে কিছুক্ষণ পর পর কেঁদেকেঁটে হাসপাতাল মাথায় তুলে নেয়। ছেলের মা তীব্র আতংক নিয়ে তাকিয়ে থাকে রেহবারের দিকে। বাধ্য হয়ে রেহবারকে কোলে তুলে নিতে হয় ছেলেকে। বাবা হওয়ার শখ যেনো এই কয়েকদিনেই মিটে গেছে। গুলিস্তা ওকে খাওয়াতে পারে না, কোলে নিতে পারে না। জোর করে কোলে তুলে দিলে কোলে নিয়ে পাথরের মতো বসে থাকে। নড়াচড়া বন্ধ। যেনো একটু নড়লেই ছেলে কোল থেকে পরে যাবে না।

গাড়ি থেকে নেমে গুলিস্তার কোল থেকে ছেলেকে নিজের কোলে তুলে নিলো। এরপর গুলিস্তা গাড়ি থেকে নামলো। ঘরবাড়ি অবশ্য মালা রোজ এসে পরিষ্কার করে রেখে যায়। রেহবার নিজেও সকালের দিকে একবার এসে ঘুরে যেতো।
বেডরুমে ওদের বিছানার উপর ঠিক মাঝে জায়গা করে নিয়েছে ছোট আরেকটা বেড। সেখানে ছেলেকে শুইয়ে দিলো। গুলিস্তা কোনোদিকে না তাকিয়ে সোজা চলে গেলো বারান্দায়। কতোদিন তিতানকে দেখে না!
রেহবার ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমের দিকেই যাচ্ছিলো, গুলিস্তার চিৎকারে দ্রুত ব্যালকনির দিকে ছুটে গেলো। গিয়ে দেখলো ফ্লোরে বসে আছে গুলিস্তা।
ব্যালকনিতে এসে ফাঁকা খাচা দেখে গুলিস্তার বুক ধক করে উঠে। চারপাশে খুঁজে কোথাও পেলো না তিতানকে। ফ্লোরের দিকে তাকাতেই নজরে এলো, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তিতানের ধূসর পালক। রেহবার বলে চিৎকার করে ফ্লোরে বসে পরলো গুলিস্তা।

খাঁচার ভেতর ভেঙে পরে আছে মাটির হাড়ি৷ খাবার প্লেট, পানির পাত্র উল্টে পরে আছে৷ নিচে ছড়িয়ে থাকা তিতানের গায়ের পালক। সবকিছু সাক্ষ্য দিচ্ছে, তিতান নেই। তার সাথে ভয়ংকর কিছু ঘটেছে। হতবিহ্বল রেহবার নিজেও বসে পরলো গুলিস্তার পাশে৷ আলতো করে কাঁধে হাত রেখে বললো,
- গতকাল সকালেই ওকে দেখে গিয়েছি৷ খাঁচার ভেতরেই ছিলো। খাবার, পানি দিয়ে আমি চলে গিয়েছিলাম। কীভাবে যে কি হলো! দেখে মনে হচ্ছে বিড়াল আক্রমণ করেছিলো।

হে সখাWhere stories live. Discover now