53

62 0 0
                                    


দুঃশ্চিন্তায় রিনাতের মাথার ভেতর তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছে। মনে হচ্ছে মাথার ভেতরে বসে হাতুড়ি পেটাচ্ছে কেউ। তবুও চোখ মুখ স্বাভাবিক করে বসে আছে ব্যালকনিতে। গুলিস্তা পানি দিচ্ছিলো মানিপ্লান্টের গাছে। সেও স্বাভাবিক। আজ অনেকক্ষণ সময় ব্যয় করছে পানি দেওয়ার কাজে। গাছে পানি দেওয়া তো বাহানা মাত্র। সে দৃষ্টি রাখছে সদর দরজায়।
রিনাতের দৃষ্টি ঘড়ির কাটায়, গুলিস্তার সূর্যের দিকে। সূর্য নিজের জায়গা থেকে আরেকটু খানি পশ্চিমের দিকে হেলতেই গুলিস্তা ফিরে এসে টি টেবিলের উপর থেকে নিজের ফোনটা হাতে নিলো। কল করলো রেহবারের ফোনে। ওপাশে রিসিভ হওয়া মাত্রই যান্ত্রিক স্বরে বললো,
- তোমার মেয়ে এখনো বাড়ি ফিরে নি। খুঁজে নিয়ে এসো।

রিনাত চমকে পেছনে তাকালো। মা টের পেলো কীভাবে? ওর চোখে মুখে কি দুঃশ্চিন্তার ছাপ বুঝা যাচ্ছে? রেহবার কিছু বলার আগেই গুলিস্তা ফোন কেটে দিয়ে আবার নিজের কাজে ফিরে গেলো।
লুকানোর আর কিছু বাকি নেই। মা যেহেতু জেনেই গেছে তাই রিনাত আর বসে রইলো না। একেরপর এক কল করতে থাকলো রিনাতের ফোনে৷ বিকাল পাঁচটা পেরিয়ে সাড়ে পাঁচটা বাজতে চললো এখনো ঘরে ফিরেনি নিনাত। বাড়ি ফিরতে আধা ঘন্টার বেশি কখনোই লাগে না।
সময় গড়াতে লাগলো সেই সাথে বাড়লো রিনাতের অস্থিরতা।

- মাম্মাম, আমি না হয় একটু এগিয়ে গিয়ে দেখে আসি।

ঘর থেকে বেরোতে বেরোতে জানাল রিনাত। অনেকদিন পর ঘর ছেড়ে ছেলের পিছু পিছু এলো গুলিস্তা৷ সিড়ির ধাপে দাঁড়িয়ে দ্রুত পায়ে ছেলেকে এগিয়ে যেতে দেখছে৷ কানে ফোন চেপে ধরে ড্রয়িংরুম পার হতেই রিনাতের পা থমকে গেলো। দ্রুত পায়ে বাড়িতে প্রবেশ করলো নিনাত৷ ভালো করে লক্ষ্য করে নিশ্চিত হলো সবকিছু স্বাভাবিক এবং নিনাত একদম সুস্থ৷ প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হলো রিনাতের। কোনো বিপদ আপদ আলহামদুলিল্লাহ ঘটেনি। তাহলে দেরী হলো কেনো?

- তোর কোনো ধারণা আছে, বাড়িতে মানুষগুলো কতোটা টেনশন করছে? এতোক্ষণ দেরী হলো কেনো? কোথায় গিয়েছিলি? বড্ড সাহস হয়েছে আজকাল। কতোক্ষণ ধরে ফোন দিচ্ছিলাম৷ ফোন কোথায় তোর?

হে সখাWhere stories live. Discover now