32

28 0 0
                                    

রেহবারের কথায় রানু খুব বেশি অবাক হলো না। প্রায়ই সময় এমনটাই ঘটে। খুব আগ্রহ নিয়ে চিকিৎসা শুরু করার পর মাঝপথে এসে থেমে যায়।  এমন অনেক অভিজ্ঞতা আছে রানুর। তবে সে রেহবারকে অন্য সবার থেকে আলাদা ভেবেছিলো। পেশাগত স্থানে আবেগ দিয়ে ভাবলে চলবে না। হতাশা নিজের মধ্যে আবদ্ধ রেখে স্বাভাবিকভাবেই বললো,
-  চিকিৎসা কনটিনিউ করা কিংবা অফ করে দেওয়া সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এক্ষেত্রে আমি হস্তক্ষেপ করতে পারি না। তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত জানতে চাইলে বলবো, ভুল করছেন। গুলিস্তা সবেমাত্র নিজের সমস্যা বুঝতে শুরু করেছে। নিজেকে থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাইছে। ওর মনে অনেক প্রশ্ন জাগবে৷ অনেক মানসিক পরিবর্তন ঘটবে৷ ওর সাহায্যের প্রয়োজন হবে। অথচ আপনি এই মুহুর্তে ফিরে যেতে চাইছেন! 

রেহবার চুপ করে রইলো। সে কি একটু স্বার্থপর হচ্ছে না? অবশ্যই হচ্ছে। নিজেই এখানে থাকতে চাইছে না। গুলিস্তার খাতিরে থাকতে বাধ্য হয়েছিলো। এরপর গুলিস্তা যখন বাড়ি ফিরে যাওয়ার আবদার করছে, এখন আর কোনোভাবেই মন টিকছে না।
-  চিকিৎসা বন্ধ করে দিচ্ছি না ডক্টর। এই কয়েকদিন ওকে সরাসরি দেখেছেন, অবজারভ করেছেন। সে অনুযায়ী যে মেডিসিন দিয়েছেন সেগুলো রেগুলার নিচ্ছে। বাকি থাকলো কাউন্সিলিং। সেটা অনলাইনে কি কোনোভাবে সম্ভব নয়? একচুয়েলি আমার নিজেরও এখানে ভালো লাগছে না। গুলিস্তাও ফিরতে চাইছে।
-  অনলাইন ও অফলাইনের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য  রয়েছে। অফলাইনে সামনে বসা মানুষটির মনের অবস্থা খুব সহজেই বুঝতে পারা যায়। চোখের ভাষা, বসার ধরণ, কথার বলার ভঙ্গি, গলার স্বর কিংবা বডি মুভমেন্ট এগুলো কি একটি যান্ত্রিক ডিভাইস ঠিকঠাকভাবে আমাকে দেখাতে পারবে?

রেহবারের কাছে কোনো উত্তর নেই। সে নিজেও জানে ব্যাপারটা এতোটা সহজ হবে না।
-  কিছুটা কমতি হয়তো থেকে যাবে কিন্তু বাড়িতে যে মানসিক শান্তিটুকু পাওয়া যেতো সেটা এখানে পাচ্ছি না। এখানে আসার পর থেকে গুলিস্তা নিজেও ঘরের কোণে বসে থাকে। শুধুমাত্র আপনার সাথে দেখা করতে যা একটু বের হয়। অথচ আমাদের বাড়িতে সারাদিন পুরো বাড়ি জুড়ে ঘুরে বেড়াতো। এটা ওটা কাজ করতো।

হে সখাWhere stories live. Discover now