17

26 1 0
                                    


সন্ধ্যার আকাশে হালকা লালচে আভা ছড়িয়েছে। গলা ছেড়ে ডাক দিয়ে নীড়ে ফিরছে পাখির দল। ছোট্ট মেয়েটা দ্রুত পায়ে হাটতে গিয়ে কখনো একটু দৌড়ে পথ পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছে৷ গায়ের লাল টুকটুকে ফ্রকটায় ধুলো মাখামাখি। মায়ের ধমক জুটবে নিশ্চিত। গোসলের পর পরিষ্কার পোষাক গায়ে পরিয়ে দিয়ে মা বলেছিলো, নিজ ঘরে গিয়ে খানিকক্ষণ ঘুমিয়ে নিতে৷ কিন্তু প্রজাপতি ছোটাছুটি ছাড়া থাকতে পারে নাকি! আঘাতপ্রাপ্ত ডানা নিয়ে হলেও উড়বার চেষ্টা করে৷ ছোট্ট মেয়েটি সন্তপর্ণে সবার আড়ালে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলো৷ সাবধানেই বৌ চি খেলাটা খেলছিলো। খেলা এই শেষ হলো বুঝি। কোথা থেকে দুষ্টু জেরিন আপুটা এসে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিলো৷ লাল জামাটায় ধুলো লেগে একদম সাদা হয়ে গিয়েছে। ছোট্ট মেয়েটি রেগেমেগে মাটিতে পরেই কান্না জুড়ে দিলো৷ বন্ধুরা ছুটে এসে ধরাধরি করে মাটি থেকে না তুলে দিলে ওখানেই গড়িয়ে গড়িয়ে কান্না চলতেই থাকতো৷
- তুই ওকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলি কেনো?

- ধাক্কা দিলাম কখন! আমি দৌড়ে আসছিলাম, ও দেখতে পেয়েও  সামনে থেকে সরেনি দেখেই তো পরে গেলাম। পাটকাঠির মতো শরীর। এই নিয়ে খেলতে আসে। 

- আমি দেখেছি তুই ইচ্ছে করে ধাক্কা দিয়েছিস। 

- বললেই হলো। খেলতে গেলে এমন একটু পরেটরে সবাই যায়। এসব ননীর পুতুল খেলতে আসে কেনো? এই তোর কান্না থামা তো। কালকে থেকে আর খেলতে আসবি না তুই। তোকে খেলায় নিবো না। এখন ভাগ এখান থেকে।

হালকা ধাক্কা মেরে ছোট্ট মেয়েটিকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতেই মেয়েটি নিজের ক্ষুদ্র দু হাতে জেরিনকে উল্টোদিকে ধাক্কা মেরে বললো,
- তোমাদের সাথে খেলতে আমার বয়েই গেছে। আর আসবো না খেলতে৷

সামান্য ধাক্কায় জেরিন হুমড়ি খেয়ে পরে যেতেই বাচ্চারা হা হা করে হেসে উঠলো৷ ছোট্ট মেয়েটি সেই হাসি তামাশায় যুক্ত না হয়ে দ্রুত পা চালালো বাড়ির উদ্দেশ্যে। বেলা ডুবে যাচ্ছে, বাড়ি ফিরতে হবে। কিন্তু বাড়ির সদর দরজায় এসে ওর পা থমকে গেলো। জেরিন ওর মায়ের সাথে দাঁড়িয়ে আছে। এতো তাড়াতাড়ি এই মেয়ে এখানে কীভাবে এলো! ছোট্ট মেয়েটি গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে গেলো নিজের মায়ের দিকে। মায়ের চোখ দিয়ে যেনো আগুন ঝরছে। পাশে যেতেই শক্ত করে হাত ধরে জিজ্ঞাসা করা হলো,
- তুই ওকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিস? 

হে সখাWhere stories live. Discover now