23

26 0 0
                                    

মানুষ স্বভাবতই কৌতুহলপ্রবণ। জানার আগ্রহ মানুষকে পৌঁছে দিয়েছে গুহা থেকে বিলাস বহুল বহুতল ভবনে। তবে জানার আকাঙ্ক্ষা সবসময় সুফল বয়ে নিয়ে আসে না। এই যেমন রেহবারের কথাই ভাবুন। বিয়ের এক সপ্তাহ পরেই মা-ভাই  বিদেশে রওনা দিলো। সেই থেকে গুলিস্তা এই বড় বাড়িটিতে একাই দিন কাটিয়েছে। দিনের কয়েক প্রহর মালা সাথে থাকলেও রেহবারের কর্মব্যস্ত জীবনের কারনে গুলিস্তাকে একা একাই থাকার অভ্যাস গড়ে তুলতে হয়েছে। রেহবার অবশ্য তখনো জানতো না, একলা থাকার অভ্যাস গুলিস্তার আজন্ম আয়তব করা। কিন্তু এখন যেইনা গুলিস্তার মানসিক অবনতি সম্পর্কে জেনেছে, ওমনি গুলিস্তাকে নিয়ে ওর চিন্তার শেষ নেই। গত কয়েকদিন বেচারা অফিসেই যায়নি। কিন্তু ওয়ার্ক ফ্রম হোম কয়দিন সম্ভব! আজকে বাধ্য হয়ে অফিসে যেতেই হচ্ছে।
শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে পরবর্তী পরিকল্পনা গুছিয়ে নিচ্ছিলো রেহবার৷ আশা করা যাচ্ছে, খুব দ্রুত ফ্লোরিডার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারবে। ইতোমধ্যে গুলিস্তার পাসপোর্টের আবেদন করা হয়ে গিয়েছে। সনামধন্য একজন সাইকোলজিস্টের খোঁজ পেয়েছে রাহিল। আজ রাতে রেহবারের সাথে অনলাইন মিটিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক মতোই যাচ্ছে শুধু পরিবর্তন নেই গুলিস্তার আচরণে।  এজন্য অবশ্য রেহবার নিজস্ব কিছু পরিকল্পনা সাজিয়েছে। আগে নিজের কাজগুলো নিজে করার চেষ্টা করতো। যতোটা সম্ভব গুলিস্তার উপর হতে কাজের প্রেসার কমানোর প্রয়াস। কিন্তু আজকাল সে বড্ড অলস হয়ে গেছে। সে কোনো কাজে গলা ছেড়ে ডাকতে শুরু করে, ফুল, এই ফুল...
গুলিস্তা বিরক্ত হলেও প্রকাশ করে না। বিনাবাক্যে আদেশ পালন করে৷ যে রেহবার একজন অর্গানাইজড পার্সোন ছিলো, সে এখন পুরোই এলোমেলো। গোসল করতে গিয়ে তোয়ালে নিতে ভুলে যায়, চেঞ্জিং রুমে দাঁড়িয়ে দ্বিধায় ভুগে কোন শার্টটি পরবে, সামনে পরে থাকা হাতঘড়িটিও খুজে পায় না, অফিস থেকে ফিরে গাড়ির চাবি কোথায় রেখেছে জানে না। সবকিছুতেই এখন তার ফুলের সাহায্যের প্রয়োজন হয়। শাওয়ার নিয়ে বাথরুমের দরজাটি হালকা খুলে একটু উঁকি দিয়ে বাইরে তাকালো। গুলিস্তাকে ডাকতে যাবে তখনি চোখের সামনের দৃশ্য দেখে নিজেই অপ্রস্তুত হয়ে গেলো। দরজার সামনে গুলিস্তা নিজেই দাঁড়িয়ে আছে তোয়ালে হাতে।  অপ্রস্তুত হেসে হাত বাড়িয়ে তোয়ালা নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো। 'মেয়ে চালাক হয়ে গেছে দেখছি।'

হে সখাWhere stories live. Discover now