25

26 0 0
                                    

প্লেনে যে খাবার দেওয়া হয়েছিলো সেটি গুলিস্তা ছুয়েও দেখিনি। এর মাঝে বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী ডিনার টাইম পেরিয়ে গেছে। গুলিস্তা নিশ্চয়ই ক্ষুধার্ত। সেই চিন্তা করেই কিছু হেভি স্নেকস নিতে খানিকটা দেরী হয়ে গেলো। এতোক্ষণে নিশ্চয়ই ভীতু মেয়েটার প্রাণ যায় যায় দশা৷ রেহবার দ্রুত পা চালিয়ে ওয়েটিং এরিয়ায় এসে সাক্ষী হলো সুনসান নীরবতার। চকিতে চারদিকে সতর্ক দৃষ্টিতে তাকালো গুলিস্তার খোঁজে। না বলে কোথায় যাওয়ার মতো মেয়ে সে নয়৷ রেহবারের কথা অমান্য করে আসন ছেড়েছে মানে চাপে পরে বাধ্য হয়ে  এমন পদক্ষেপ নিয়েছে।  এতো বড় বিমানবন্দরে এলোমেলোভাবে ওকে খুঁজে বেড়ানো বোকামি। রেহবার দ্রুত ভাবতে লাগলো।
প্রথম অপশন, বাথরুমে গিয়েছে। দীর্ঘ জার্নির পর বাথরুম যাওয়ার প্রয়োজন হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।
দ্বিতীয় অপশন, এখান থেকে উঠে যেতে বাধ্য হয়েছে।
প্রথম অপশন ধরে রেহবার বাথরুমে চেক করে নিরাশ হলো।
অতএব দ্বিতীয় অপশন নিশ্চিত। গুলিস্তা বসেছিলো বামপাশের প্রথম চেয়ারটিতে। এখান থেকে উঠে সে এতোটা ঘুরে ডানদিকে যাবে না।  এ ধরনের মানুষেরা সবসময় ঝামেলা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। যে পদ্ধতিতে নিজের কাজ খুব সহজে সম্পন্ন করা যায়, সেই পদ্ধতিটি তারা বিনা বিবেচনায় অবলম্বন করে। অতএব গুলিস্তার এখান থেকে উঠে যেতে হলে সে সোজা বামদিকের রাস্তা ধরেই এগিয়েছে।
নিজেদের লাগেজ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সেখানেই ফেলে রেখে রেহবার ছুটতে থাকলো বামদিকে রাস্তা ধরে।
দূর থেকে গুলিস্তাকে চিনতে ওর বেশি সমস্যা হলো না। বারবার নিজের চারপাশে নজর বুলিয়ে, গন্তব্যহীন চলার কারনে বেশিদূর যেতে পারেনি গুলিস্তা। অপরিচিত সেই ভদ্রলোক এখন আর কিছু বলছে না। শুধু সতর্ক ভাবে ওর পেছনে হেঁটে চলেছে। ওর কাছে কী চাই কে জানে! এর মধ্যে পেছনে থেকে কেউ উচ্চস্বরে ডাক দিলো,
- ফুল...

গুলিস্তার মনে হলো সে ভুল শুনেছে। এমনিতেই অনেকক্ষণ ধরে মনে প্রাণে রেহবারকে ডেকে চলেছে। রেহবারের স্মৃতি মাথায় মধ্যে গিজগিজ করছে। তাই হয়তো মতিভ্রম হচ্ছে। কিন্তু সামনে তাকিয়ে দেখলো আশেপাশের মানুষজন সবাই ওর দিকেই চেয়ে আছে। তখনি পেছন থেকে আবার সেই কন্ঠস্বর ভেসে আসলো,
- এই ফুল, ওদিকে কোথায় যাচ্ছো? আরে থামো বলছি।

হে সখাWhere stories live. Discover now