24

29 0 0
                                    

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রেহবার চুল চিরুনী করছে। সেই সাথে দেখছে দরজা থেকে উঁকিঝুঁকি দেওয়া গুলিস্তাকে।  মেয়েটা কিছু একটা বলতে চাইছে কিন্তু বলছে না। এই নিয়ে কয়েকবার দরজার সামনে এসে আবার ফিরে গেছে। রেহবারের এতোটা অনুপ্রেরণামূলক আচরণের পরেও কিছু বলতে দ্বিধা করছে ভেবে খানিকটা মন খারাপ হলো। ডাইনিং টেবিলে খেতে বসেও খাবারের নাড়াচাড়া করতে দেখে রেহবার নিজেই জানতে চাইলো,
- কি বলতে চাইছো বলে ফেলো। এতো ভাবনা চিন্তা করার দরকার নেই৷ কখনো কখনো আমাদের হুট করে কিছু কাজ করে ফেলতে হয়। এতো ভেবে চিন্তে জীবন চলে নাকি!

কথাগুলো শুনে কিছুক্ষণ কি যেনো ভাবলো। তারপর মাথা নিচু করে মিনমিন করে বললো,
- অফিস না যাই?
- আচ্ছা, যেতে হবে না।

রেহবারের স্বাভাবিক উত্তর শুনে গুলিস্তা অবাক হলেও ভাবলেশহীন কন্ঠে জানতে চাইলো,
- সত্যি?
- হ্যাঁ যেতে ইচ্ছে না করলে যাবে না। তবে এখন আমরা অফিসে নয়, অন্য কাজে বাইরে যাবো। তৈরী হয়ে নেও।

পাসপোর্ট অফিসের সামনে এসে গুলিস্তা আরেকুদফা অবাক হলো। কিন্তু রেহবারের পিছু পিছু ভেতরে প্রবেশের পর ওকে যা যা করতে বলা হলো বিনাবাক্যে সেগুলো মেনে নিলো। ফটোসেশন, আই স্ক্যানিং, ফিংগারপ্রিন্ট  এর প্রক্রিয়া শেষ হলো দ্রুত। কাগজপত্র যা কিছু প্রয়োজন ছিলো সেগুলো রেহবার জমা দিয়ে দিয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করে ওরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলো। রেহবার ভেবেছিলো গুলিস্তা নিশ্চয়ই প্রশ্ন করবে, পাসপোর্টের ব্যাপারে জানতে চাইবে। সেসবের কিছু হলো না। পথের ধারে ফুচকার দোকান চোখে পরায় রেহবার গাড়ি থামালো।
গাছের নিচে চেয়ার টেবিল পাতানো। সেখানে বসে এক প্লেট দই ফুচকা অর্ডার করলো। পুরোটা সময় গুলিস্তা খুব আগ্রহ নিয়ে রেহবার ও ওয়েটারের কথোপকথন শুনলো। 

- তোমাকে খুব সহজে বোকা বানিয়ে বিপদে ফেলা যাবে, এটা জানো?
গুলিস্তা মাথা দুলিয়ে না জানালো। তা দেখে রেহবার হেসে বললো,
- তোমাকে একটি অপরিচিত জায়গায় নিয়ে গেলাম, তুমি বিনাবাক্যে চলে গেলে। জানতেও চাইলে না কোথায় নিয়ে যাচ্ছি! ওখানে তোমাকে যা যা করতে বলা হলো, তা চুপচাপ মেনে নিলে। কেনো ছবি তুললো, আই স্ক্যান করলো কিছুই জানো না। তোমার মধ্যে কোনো কৌতূহল নেই, সতর্কতাও নেই। এসব কালেক্ট করে তোমাকে যেকোনো বিপদেও ফেলতে পারে।
- আপনি সাথে ছিলেন তো।
- কাউকে চোখ বুজে বিশ্বাস করা ঠিক নয়। পরিচিত অপরিচিত কারো উপরেই এতোটা নির্ভরশীল হবে না। পাসপোর্ট অফিসে কেনো যাচ্ছি এটা আমাকে জিজ্ঞাসা করা উচিত ছিলো। এখনো কিন্তু কিছু জানতে চাচ্ছো না। অথচ মনে ঠিকই প্রশ্ন জেগেছে৷

হে সখাWhere stories live. Discover now