স্কুলে সবাই নিনাতকে রেহনুমা বলে ডাকে। বাবার নামের সাথে মিলিয়ে রাখা নাম দ্বারা পরিচিত হতে পছন্দ করে নিনাত নিজেও।
স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে হাইস্কুলে প্রবেশ করেছে বেশিদিন হয়নি। এখনো ছোট বাচ্চার মতো মেয়েকে স্কুলে আনা নেওয়া করে রেহবার৷ যেদিন নিজে খুব ব্যস্ত থাকে সেদিন স্কুলের গেটে এসে হাজির হয় রিনাত৷ গেট পেরিয়ে রাস্তায় আসতেই রিনাতকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মন ভুলানো হাসি দিলো নিনাত। বোনের মুখের এই হাসিটির জন্য শত কষ্ট উপেক্ষা করতে পারে রিনাত।
রিনাত এবার কলেজে ভর্তি হয়েছে। দুপুরবেলা কলেজ ছুটি হলে সোজা বাড়ি ফিরে যায়। মায়ের সাথে দুপুরের খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়। চারটায় নিনাতের স্কুল ছুটি হয়৷ বাড়ি থেকে রিক্সায় বিশ মিনিটের পথ। ঠিক সাড়ে তিনটায় আবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে পরে নিনাতের স্কুলের উদ্দেশ্যে।দুই বেণী দুলিয়ে ভাইয়ের কাছে এসে দাঁড়িয়ে বললো,
- তুমি কেনো আসতে গেলে! আমি কি এখনো ছোট আছি?বোনের হাতে আইসক্রিম ধরিয়ে দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে রিনাত বললো,
- ছোটই তো। সাইজে আমার অর্ধেক৷ভাইয়ের বুক সমান উচ্চতার কাছে বরাবর হেরে যায় নিনাত৷ মুখ ফুলিয়ে অন্য দিকে তাকালো৷ রিনাত ততোক্ষণে রিক্সা দাঁড় করিয়েছে৷ দুজনে রিক্সায় উঠে হুড তুলে দিলো। বাইরে তখন ধীরে ধীরে রোদ নামতে শুরু করেছে৷
ব্যস্ত জীবনে অভ্যস্ত রেহবার। চুপচাপ বসে থাকতে পারে না। অফিস থেকে ফিরে বাচ্চাদের সাথে সময় কাটায়। রিনাত যখন ছোট ছিলো, ওকে পড়াতে বসাতো। এখন ছেলে বড় হয়েছে। নিজের পড়া নিজেই পড়ে৷ নিনাতকেও সাহায্য করার প্রয়োজন হয় না। কোথাও আটকে গেলে রিনাত দেখিয়ে দেয়। ঘরে একলা বসে মন টিকছিলো না রেহবারের। সিড়ি বেয়ে নিচে নামতেই দেখলো ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে রিনাত ও নিনাত বই পড়ছে। আগে দুজনে রিনাতের ঘরে পড়তো। এক বছর হলো নিনাতের ঘর আলাদা হয়েছে। দু ভাইবোন দুই রুমে ঘুমালেও পড়তে বসে একসাথে। খাওয়া দাওয়া, খেলাধুলা, টিভি দেখা, ঘুরতে যাওয়া সবকিছুতেই দুজনে একসাথে। নিনাত যতটা ভাই নেওটা, রিনাতও বোন বলতে পাগল। এখনো নিনাতের আঙ্গুল ধরে হাঁটে।
YOU ARE READING
হে সখা
Romanceএকবার দেখেই বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলো রেহবার ও গুলিস্তা। বিয়ের পর সব ঠিকঠাক চললেও গুলিস্তার নির্লিপ্ততা, অস্বাভাবিক ঠান্ডা আচরণ রেহবারের মনে গাঢ় সন্দেহের জন্ম দেয়। ভালো মন্দ সব পথ অবলম্বন করে মূল কারণ উদ্ধারের চেষ্টায় সামনে আসে গুলিস্তার অতীত। যা...