33

27 0 0
                                    


যা আটকে রাখতে চাই, তা বেশি করে ছুটে যায়। সময়ের ক্ষেত্রেও তাই। সুখের সময় যেনো আলোর বেগে ছুটে যায়। এইতো সেদিন এলো ছেলেটা। এখনি মাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার দিন এসে গেলো। আড়ালে চোখ মুছলেন আম্বিয়া খাতুন। ডাইনিং টেবিলে রাতের খাবার খাচ্ছিলো সবাই। একটু পরেই যাত্রা শুরু হবে। রেহবার ও গুলিস্তাকে দুপাশে নিয়ে মাঝখানে বসেছেন আম্বিয়া খাতুন। নিজের যথাসম্ভব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছেন। যাত্রাকালে ছেলের মন খারাপ করাতে চাইছেন না। মায়ের আদ্র চোখ রেহবারের দৃষ্টি এড়িয়ে যেতে পারেনি। সেই ছোটবেলার মতোন মায়ের কাঁধে মাথা এলিয়ে বললো,
-  চলো তোমাকে আমাদের সাথে নিয়ে যাই।
পাশ থেকে রাহিল হৈ হৈ করে উঠলো।
-  তুমি যাচ্ছো যাও। আমার মাকে নিয়ে একদম টানাটানি করবে না।

ওর দিকে মনোযোগ না দিয়ে রেহবার মায়ের উদ্দেশ্যে বললো,
-  মাঝেমধ্যে আমার মনে হয় তুমি ওই বাদরটাকে বেশি ভালোবাসো। আমাকে একা রেখে ওর সাথে চলে এলে।

রাহিল আবার বলে উঠলো,
-  একলা কোথায়? তোমার জন্য পার্টনার ম্যানেজ করে দিয়ে তবেই এসেছি। এখন তোমার পার্টনার আছে, আমারও আছে। মা তোমার সাথে চলে গেলে আমি একলা হয়ে যাবো? আমাকে নিয়ে কারো চিন্তা নেই।
-  তোকে বিয়ে করতে বারণ করেছে কে? বিয়ে করে নিজের পার্টনার নিয়ে আয়। আমি আমার মাকে নিয়ে চলে যাই।

দুই ছেলের তর্ক বিতর্কে আম্বিয়া খাতুন মুচকি হাসেন। রেহবারের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। ইমতিয়াজ মামুন চুপচাপ ধরনের মানুষ। দুই ছেলের খুনসুটিতে নিজের শান্ত স্বরে বললেন,
-  রেহবার ভুল কিছু বলেনি। বিয়ের ব্যাপারে কিছু ভেবেছো তুমি?

রাহিল যেনো আকাশ থেকে দুম করে নিচে পরে গেলো। চোখ দুটো গোল গোল করে অবাক কন্ঠে বললো,
-  বিয়ে! আমার? আমার এখনো বিয়ের বয়স হয়েছে নাকি?
-  নাহ, তুই এখনো বাচ্চা ছেলেটি রয়ে গেছিস।

রাত দশটায় মিয়ামি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা দিবে রেহবার ও গুলিস্তা। ওদের বিদায় জানাতে বিমানবন্দর পর্যন্ত এসেছে পুরো পরিবার। সায়ীদা জামান হাসি মুখে এগিয়ে এলো গুলিস্তার দিকে। উনি সবসময় সূক্ষ্ম চোখে তাকিয়ে থাকে। গুলিস্তার ভীষণ অস্বস্তি হয়। আদুরে স্বরে বললেন,
-  আবার এসো।

হে সখাWhere stories live. Discover now