14

28 1 0
                                    

সৈকত দাঁড়িয়ে আছে বসের কেবিনের বাইরে। ভেতরে যাবে কিনা ভাবছে। বেশ কয়েকদিন ধরে বসের আলোচনা করার চেষ্টা করছিলো কিন্তু কোনো কারণে বসের মন-মেজাজ ভালো নেই। মুখ থমথমে করে অফিস আসে। সামান্য ভুল পেলেই সবাইকে ধমকায়। সারাটাদিন সবাইকে দৌড় করিয়ে তারপর শুকনো মুখে অফিস থেকে বেরিয়ে যায়। এসবের মাঝে কি আর সৈকত তার ব্যক্তিগত আলোচনা করার সাহস পায়!

লিতুন এক কাপ ব্ল্যাক কফি হাতে বসের কেবিনের দিকে যাচ্ছিলো। দরজার সামনে সৈকতকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে থেমে গেলো৷
- সৈকত স্যার, আপনি এখানে দাঁড়িয়ে কি করছেন?

হঠাৎ লিতুনকে দেখে সৈকত খানিকটা ভড়কে গেলেও নতুন আশা খুঁজে পেলো। সে ফিসফিসিয়ে লিতুনকে বললো,
- আচ্ছা লিতুন ম্যাম, স্যারের মেজাজ আজকে কি রকম?
- ভালোই। অন্যদিন যেমন থাকে।
- না মানে গত কয়েকদিন বেশ রাগারাগি করলো।
- তা করেছে। কিন্তু আজকে ঠিকঠাকই দেখলাম।
- কফি কি আপনি স্যারের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন?
- হ্যাঁ। কেনো?
- স্যারকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে আমাকে জানাবেন প্লিজ। স্যারের সাথে আমি খুব জরুরি বিষয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। এই সময় স্যারের ফুরফুরে মেজাজে থাকা খুব জরুরি।

লিতুন সৈকতকে গভীর মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করলো। বেচারা এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেনো এক্ষুনি কেঁদে দিবে।

- কি এমন কথা বলবেন?
- সে আপনাকে পরে বলবো৷ আগে আপনি ভেতরের আপডেট জানান আমাকে।
-আচ্ছা ঠিক আছে। আমি দেখে এসে জানাচ্ছি।

কিছুক্ষণ পরে লিতুন কেবিন থেকে বেরিয়ে এলো।  ওর থেকে পজেটিভ রেসপন্স পেয়ে সৈকত এসেছে তার বসের সাথে জরুরি কথা বলতে। স্বল্প বিবরণে যতোটুকু জানানো যায়, সেইটুকু বলার পর কার্ডটি বসের হাতে তুলে দিয়েছে। ওর বস এখন গভীর মনোযোগ দিয়ে কার্ডের ভেতরে লেখাগুলো পড়ছে৷ বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থেকে সৈকত খানিকটা সোজা হয়ে বসলো। টেনশনে গত কয়েকদিন বাথরুম হয়নি ঠিকঠাক। এখন মনে হচ্ছে প্রাণ পাখিটাও উড়ে যাবে। নিজের অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণ করা তার পক্ষে সম্ভব হলো না। সে গলা খাঁকারি দিয়ে বললো,
- আসলে স্যার হঠাৎ করে সব ঠিকঠাক হয়ে গেলো। পাত্রী দেখতে গিয়ে মায়ের এতো পছন্দ হয়ে গেলো যে আর দেরী করতে চাইলেন না। আমার নাকি বিয়ের বয়সও পেরিয়ে যাচ্ছে। মায়ের জোড়াজুড়িতে  মাসখানেকের মধ্যে বিয়ের স্বল্প আয়োজনে বিয়েটা সেড়ে নিতে হচ্ছে। আপনি যদি পরিবারসহ উপস্থিত হতেন খুব খুশি হতাম। বেশিক্ষণ সময় দিতে হবে না স্যার। আপনার সুবিধামতো একটা সময় এসে দাওয়াত কবুল করে একটু দোয়া দিয়ে যাবেন।

হে সখাWhere stories live. Discover now