গুরু পূর্নিমা

3 1 0
                                    

শ্রদ্ধেয় গুরু নানক কে আমরা সকলেই চিনি। তাঁর একটি বিশেষ তিথিতেই এই গুরু পূর্নিমা পালন করা হয়।
আদতে গুরু নানক ছিলেন অতি সাধারন ঘরের এক ছেলে। কিন্তু ওনার নিজের জীবনের সমস্ত শখ আল্হাদ ছেড়ে এই ধর্মের পথে আসাটাই আমাদের সবাইকে এক কথায় অনুপ্রানিত করে।কথিত আছে যে গুরুনানক ছোটোবেলা থেকেই আগ্রহী ছিলেন এই মুক্তির পথে। উনি বিশ্বাস করতেন যে মানুষ যদি বিশেষ কিছু রীতি নীতি মেনে চলেন, তাহলে তাদের আজন্মের মতো মুক্তি হয়ে যাবে এই জন্ম আর মৃত্যুর চক্র থেকে। কিন্তু সবার প্রথমেই তিনি বেছে নিয়েছিলেন উপকারের পথ। সাধারন মানুষদের উপকার করার মধ্যেই নিজের অন্তরের আনন্দ খুঁজতে শিখিয়েছিলেন তিনি সবাইকে।গুরু নানক যেদিন স্থির করেছিলেন যে তিনি এই পথে আসবেন, সেদিনই ঘর ছেড়ে চলে আসেন হিমাচল প্রদেশের সিমলাতে। সিমলার এক জলপ্রপাতে নিজেকে শুদ্ধ করে তিনি বসেছিলেন সাধনায়। শোনা যায় যে জায়গাতে তিনি সাধনা করেছিলেন, তার মাটির নিচেই ছিল উষ্ন প্রস্ববন। সেই তাপকে তোয়াক্কা না করেই তিনি সেখানে এক বছর ধরে সাধনা করেছিলেন স্থির ভাবে। এবং বর্তমানে সিমলার সেই উষ্ন প্রস্ববনকে খুবই পবিত্র মানা হয়, এবং এখনো সেখানে মানুষজন যান এর শোভা উপভোগ করতে। গুরু নানক যে জায়গাটির ভিতরে সাধনা করেছিলেন, সেটিকে আর একটি পবিত্র স্থান মানা হয়। এবং এই জায়গাটি থেকে প্রতিদিন প্রায় বহু মানুষদের খাবার পরিবেশন করা হয়, যারা আর্থিক ভাবে শূন্য। গুরু নানকের এই প্রচলনের পর থেকে এখনো পর্যন্ত একই রীতি পালন করা হয়ে থাকে এই স্থানে।
আর একটি গল্প কথিত আছে, যেখানে বলা হয় যে গুরু কোনোদিন নিজের জন্য কোনো আধ্যাত্মিক শক্তির প্রয়োগ করে প্রয়োজন মেটাননি। কিন্তু তিনি তাঁর শিষ্যদের জন্য সব সময় নিজের আধ্যাত্মিক শক্তির প্রয়োগ করেছেন। এর থেকেই বোঝা যায়, তিনি কতোটা নিঃস্বার্থ মানুষ ছিলেন। একবার উনি নিজের শিষ্যদের নিয়ে যাচ্ছিলেন ধর্ম প্রচারের জন্য। কিন্তু মাঝ রাস্তাতেই এক শিষ্য জল পিপাসায় কাতর হয়ে পড়লে গুরু তাকে বলেছিলেন একটু অপেক্ষা করতে। কিন্তু তার অবস্থা শোচনীয় হয়ে গেলে গুরু নিজের আধ্যাত্মিক বল প্রয়োগ করে সেখানে এক সুন্দর জলপ্রপাতের সৃষ্টি করেছিলেন। যা সেদিন তৃষ্না মিটিয়েছিল সেই শিষ্যের। এবং বর্তমানেও এই জলপ্রপাতের অস্তিত্ব পাওয়া যায় উত্তর ভারতের এক জঙ্গলে। সেই গুহা এবং এই জলপ্রপাত এক বড়ো সাক্ষী গুরু নানকের মহিমার, তাঁর শিষ্যদের প্রতি এবং সাধারন মানুষদের প্রতি ভালোবাসারও।জাতি, ধর্ম নিবিশেষে নানক সমস্ত দুখী মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে এবং তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে হয়ে উঠেছিলেন সবার গুরু।

~HAWAII~Where stories live. Discover now