সারপ্রাইজ

7 1 0
                                        

ইরা- "হ্যালো"অপরাজিতা- "ইরা! বল!"ইরা- " আরে আমি মুম্বাই থেকে আজ বিকেলেই ফিরেছি কলকাতা, তাই ভাবলাম আমার প্রিয় বন্ধুকে এবার জানাই। দেখা করবি কাল বিকেলে? দুজন একটু আড্ডা দেবো তাহলে।"অপরাজিতা- "সত্যি নাকি? তুই কাল রাত্রে ফোন করলি আমায়, প্রতিদিন কথা হচ্ছে, এটা জানাসনি কেন? কতদিন পর তুই এলি বলত, পুরো এক বছর পর! চল বিকেলে বেড়োই দুজন তাহলে। ঠিক আগে যেমন করতাম। বিকেল পাঁচ টায়, হাওড়া ব্রিজের ধারে।"ইরা- "ভাবলাম তোকে সারপ্রাইজ দিই, তাই। আর হ্যা, কাল দেখা হবে। রাখি তাহলে।"পরেরদিন বিকেল....অপরাজিতা- "এইইইই এইইইই ইরা আমি এখানে, হাত নাড়ছি দেখ, সোজা তাকা।"ইরা- "ওহহ ওইতো, আসছি দাড়া"অপরাজিতা ইরা কে জড়িয়ে ধরে, "কতদিন পর দেখা হল ভাই। চল ওদিকে বসি।"ইরা- "তারপর বল, কেমন চলছে তোর সব কিছু?"অপরাজিতা- "আরে তুই তো সবই জানিস, প্রতিদিনই সব জানায় তোকে। তবে সত্যি বলতে ভালো নয় রে। নতুন চাকরিটা ভালো, তবে...."ইরা- "তবে কি?"অপরাজিতা- "তবে আমার অফিসের মানুষ গুলো বড়োই অদ্ভুত। জানিস! ওদের সাথে আমার একদম ম্যাচ করে না। ওই যেমন তোকে বলেছিলাম। কেমন যেন সবাই একটা।"ইরা- "আরে এসব শুনে শুনে কান পচে গেছে, অন্য কিছু বল আজ। তাও তুই কলকাতায় আছিস, নিজের এলাকায়। আমার কথাটা ভাব তো। সেই মুম্বাই তে একা পড়ে থাকি। ছুটি পাই না কোনো ইন্ডিয়ান ফেস্টিভ্যাল এ। কোনো চেনা মুখ নেই। খুব বোরিং লাগে রে। তবে এবার এখানে এসেছি যখন, খুব আনন্দ করে ফিরব। কিন্তু আমার নাহয় রিজন আছে, তা তুই একা কেন? হুম? ইশান কেমন আছে? কই ওর কথা তো বলিস না আমায়।"অপরাজিতা- "কাছের মানুষ গুলোই যেন খুব দূরের জানিস! তাই নিজের মানুষদের সাথে থেকেও কেমন একা একা লাগে। তাও তোর সাথে প্রতিদিন কথা হয় বলে মনটা ভালো থাকে। আর ইশান? ওর কথা আর জিজ্ঞেস করিস না।" (ইষৎ হেসে)ইরা- "ওয়েট, ইশান এর সাথে কিছু হয়েছে তোর?"অপরাজিতা- "ব্রেক আপ। ছ মাস আগে।"ইরা- "Whattttt? (চমকে গিয়ে) কিন্তু তোদের তো সামনের বছর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এতদূর কথা এগোনোর পর কি হল?"অপরাজিতা- "জানিনা রে ইরা, ওর নাকি আর আমাকে ভালো লাগে না। যার আমাকে ভালো লাগেনা, তার সাথে কিকরে জীবন কাটাবো বল? তাই ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু পারছি না কোনোমতেই।"ইরা- I'm so sorry। আমি কিছুই জানতাম না এসবের। কিন্তু তুই বলিসনি কেন এসব আমায়? এত কথা হয় আর এটাই বলিস নি!"অপরাজিতা- "কি বলি বল? (চোখ মুছে) বলেই বা কি হবে? কত চেষ্টা করেছি কন্ট্যাক্ট করার, আমায় ব্লক করে দিয়েছে সব কিছু থেকেই। তাই আর ছেড়ে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। যাক, ভুলে যা সেসব। তুই বল কতদিনের ছুটি?"ইরা- "Guess what? পনেরো দিন ব্রো। পুরো ফান হবে।"অপরাজিতা- "Literally? ভাই আমরা একসাথে ঘুরবো দুদিন ছাড়া ছাড়া। খুব মজা হবে।"ইরা- "সে আর বলতে!!!"অপরাজিতা- "এখন তাহলে থাকবি। কিন্তু আর যে দেড় মাস পর পুজো। পুজোয় আসবি তো?"ইরা- "চেষ্টা করব। ছুটি পাবো কিনা জানিনা রে।"অপরাজিতা- "তুই পুজোয় এলে খুব খুশি হব। এখন তো ঠিক আছে কিন্তু চেষ্টা করিস পুজোয় আসার। আমিও আসলে একা হয়ে গেছি এতোটা!"ইরা- "চেষ্টা করব রে।আজ তাহলে উঠি, অনেকটা সময় হল। সাবধানে যাস।"অপরাজিতা- "তুই ও সাবধানে আয়। বাড়ি গিয়ে ফোন করিস।"ইরা- "অবশ্যই"দেড় মাস পর, দূর্গা পুজোর অষ্টমির দিন সকালে.... অপরাজিতা- "কিরে ইরা! পুজো শুরুর দিন থেকে কোনো ফোন নেই। আসতে পারবিনা বলে?"ইরা- "আসলে এতো ব্যস্ত হয়ে পড়েছি..."অপরাজিতা- "বুঝেছি। ঠিক আছে রাখছি। অঞ্জলী দেবো এবার। তুই কাজ কর অফিসের। রাখি।"ইরা- "আচ্ছা রাখ।"অপরাজিতার ঠিক কানের পাশে যেন ইরার গলার স্বরটা বেজে উঠল। তাড়াতাড়ি পিছনে ফিরেঅপরাজিতা- "ইরা!! তুই!! তুই এসেছিস!"ইরা- (জড়িয়ে ধরে)"বলেছিলাম চেষ্টা করব। তাই এখন তোর পাশে। চল চল অঞ্জলি দেবো তো। এগিয়ে চল।"অপরাজিতা- "তুই একবার জানাবি না আমায় তাই বলে?"অঞ্জলির ফুল হাতে নিয়ে...ইরা- "ভেবেছিলাম জানাবো, কিন্তু.... Surprise !!! As usual!!!"অপরাজিতা- "সত্যি তুই পারিস ও বটে।"

~HAWAII~Where stories live. Discover now