১২

648 44 8
                                    

অরণ্য খুব সাবধানে বালিশ থেকে নিঝুমের ঝুলে যাওয়া মাথাটা আবার বালিশে তুলে দিল। বউয়ের ঘুমটা ও ভাঙ্গতে চায় না। খুব আস্তে করে নিঝুমের মুখের উপর থেকে চুলের গোছাটা সরিয়ে দিল অরণ্য। খুব ইচ্ছে হচ্ছিল ওর নরম পদ্মরাঙা ঠোঁট দুটোর সুধা মাতাল হয়ে খানিকটা অনুভব করে। কিন্তু চোরের মতো একাজ করতে আগ্রহী নয় সে।
বিশেষ করে সেটা যখন কেবলই ওর।

তবু আলতো হাতে একটু আঙ্গুল ছুঁইয়ে দিল অরণ্য কমলার কোয়ার মত নরম ঠোঁট দুটিতে।

নিজের ভেতরে এক ধরনের অস্থিরতা অনুভব করছে অরণ্য... আকাঙ্ক্ষাটা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে সময়ের সাথে সাথে। জোরে জোরে কয়েকবার শ্বাস টানল অরণ্য, ভীষন রকমের সংযম দরকার ওর এই মুহুর্তে। না হলে নিঝুমের ভালোবাসার কাছে ছোট হয়ে যাবে ওর ভালোবাসা। কিন্তু নিঝুমের প্রতি ওর ভালবাসাটা মেকি নয়। আর কেউ না জানুক অরণ্য নিজে তো জানে, সেটাই বা কম কি।

"নিজেকে সামলা অরণ্য," নিজেই নিজেকে কষে একটা ধমক দেয় অরণ্য। "আজ জড়িয়ে ধরতে পারছিস... তাতেই খুশি থাক, তার উপর আবার চুমো খাওয়ার সাধ। ঝুম যে বিছানায় একপাশে তোকে বসে থাকার অনুমতি দিয়েছে এই তোর জন্য চাঁদ রাত। "

মুঠোয়া ধরে রাখা নরম তুলতুলে হাতটি নিজের রুক্ষ খসখসে গালের উপর চেপে ধরে অরণ্য।

কি আশ্চর্য না? বউ বউ ডাকতে ডাকতে সত্যি বউ হয়ে গেল ঝুম ওর। কথাটা মনে হতে নিজে একা একাই হাসল অরণ্য। অথচ কাল সকালে ওরা দুজন যখন ঘর থেকে বের হয়েছিল তখন ঘুনাক্ষরেও কেউ জানত না যে, আজ থেকেই ওদের দুজনের জীবনটা এক সুতোয় আটকে যাবে।

এখন থেকে একা আমার বলে আর কোনো শব্দ নেই ওর জগতে, সব আমাদের হয়ে গেছে। অরণ্য অনেকটা সময় অপলক চোখে ঘুমন্ত পরীটার দিকে তাকিয়ে থাকে। কালকের দুর্ঘটনায় নিঝুমের অনেক স্বপ্নের কবর হয়ে গেছে জানে অরণ্য । কিন্তু ব্যাপারটা আসলে ওর হাতের আওতার মধ্যে ছিল না।

কাল যখন অরণ্যর হুশ হলো তখন মেয়েটা কোনমতে গায়ে কাপড় পেচিয়ে বসে আছে। ঝুমের দুচোখ ভরা পানি আর ওর জন্য একরাশ ঘৃনা। ঠিক ওই মূহুর্তে একবার প্রচন্ড রাগও হয়েছিল অরণ্যর নিঝুমের প্রতি... এত অবিশ্বাস!

লুকোচুরি Where stories live. Discover now