"মন খারাপ? ""নাহ... " নিঝুম হাসল। আজ ফাহিম ভাই আর আশু ঢাকায় চলে গেল। সকাল সকাল ওদের নাস্তা খাইয়ে স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে উঠিয়ে দিয়ে এসেছে ও আর অরণ্য। নাস্তায় পাতলা আটার রুটির সাথে আলুর দম, ডিম ভাজি আর সুজির হালুয়া ছিল।
ব্যাস অরণ্য বাবুর মেজাজ ঠান্ডা.... সুজির হালুয়া এত পছন্দ তার, কেন কে জানে? অবশ্য ফাহিম ভাই চলে যাচ্ছে এটাও অরণ্যর একটা বড়ো স্বস্তির কারন, কিন্তু এখন থাকলেও বা কী এসে যেত। ফাহিম ভাই একেবারে সরাসরি প্রস্তাব দিয়েছে আশুকে আর তাও একেবারে সাথে করে নিয়ে যাবার প্রস্তাব। এখন আশুর আপত্তি থাকলে আলাদা কথা ছিল কিন্তু ও তো একেবারে আনন্দে আত্মহারা, পারলে আজই বিয়ে করে।
নিঝুমও আসলে আনন্দটা চেপে রাখতে পারছেনা কিন্তু কেমন ভয় ভয়ও হচ্ছে। আম্মু- আব্বু রাজি হবে কিনা বুঝতে পারছেনা নিঝুম। আশু এখনও ছোট বিয়ের জন্য আর সবাই এটা না মনে করে যে ওই আশুকে এইসব উল্টাপাল্টা বুদ্ধি দিয়েছে। বড়ো ফুপিকে ভীষন ভয় করে ওর, ওনার মুখের কোন লাগাম নেই আর ওর সাথের এই হাড় বজ্জাত লোকটা... কিছু কলকাঠিতো পিছনে নেড়েছে শিওর।
"তাহলে? " অরণ্য পেছন থেকে নিঝুমকে আকড়ে ধরল দুহাত দিয়ে।
থুতনিটা নিঝুমের কাঁধের উপর রেখে দূরের ছোট ছোট টিলাগুলো দেখছিল অরণ্য। চারপাশ এতো সবুজ যে, প্রতিটা নিঃশ্বাসকে একদম বিশুদ্ধ মনে হচ্ছে ওর। মানুষ আসলেই অদ্ভুত একটা প্রানী.... যান্ত্রিকতা ভাল লাগে না আর যন্ত্র ছাড়া থাকতেও পারেনা। কোলাহল ভালো লাগেনা, কিন্তু দুদিন যেতে না যেতেই ওই সিএনজি আর ধোঁয়া উঠা বাসের শব্দ শোনার নেশা জাগে, কথাটা ভেবে একাই হো হো করে হেসে ফেলে অরন্য।
আসলে এখানে যতই ভাল লাগুক না কেন আবার সেই যান্ত্রিক শহরেই ফিরে যাবার জন্য দুদিন পর মন টানতে থাকবে। ঢাকা শহরের উঁচু উঁচু বিল্ডিংগুলোর আকর্ষন তখন এই মেঘ ছুঁয়ে থাকা পাহাড়গুলোকেও বুঝি হার মানায়।
"খুব চিন্তা হচ্ছিল জানো... তুমি যখন বললে যে আশু ফাহিম ভাইকে পছন্দ করে তখন থেকে নিজেকে কী রকম অপরাধী মনে হচ্ছিল। কিন্তু আজ খুব শান্তি লাগছে, নির্ভার লাগছে।"
YOU ARE READING
লুকোচুরি
Romanceবাংলা রোমান্টিক থ্রিলার। ভালবাসা বলে কয়ে আসেনা তার জলজ্যান্ত প্রমান নিঝুম নামের মেয়েটি। ভার্সিটি পড়ুয়া হাসিখুশি মেয়েটা হুট করেই প্রেমে পড়ে যায় অচেনা একটি মানুষের। আর তারপরই জন্ম নেয় কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত মুহূর্তের, যার ফলশ্রুতিতে অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটতে থাক...