৪৮

584 38 11
                                    


আসমা বেগম থরথর করে কাঁপছেন অন্ধকারে। ভীষন ভীষন খারাপ লাগছে তার এই মুহূর্তে, বুক ধড়ফড় করছে সেই সাথে।

সারাদিন পরে ছেলেটা বাইরে থেকে এসেছে দেখে তিনি অয়নের সাথে কথা বলতে ওর ঘরে এসেছিলেন। কিন্তু ঘরে পা দিয়ে অয়নকে না পেয়ে খোলা দরজা দিয়ে বারান্দায় এসে  দাঁড়িয়েছিলেন।

দুই ভাই পাশাপাশি থাকতো বলে ওদের দুজনের  ঘরের সাথে একটা কমন বারান্দা আছে। মনে করেছিলেন অরণ্যর বিয়ের পর অয়নকে দোতালার রুমে পাঠিয়ে দিবেন। কিন্তু তার আর প্রয়োজন হয়নি, অরণ্যটা নিজেই নাই হয়ে গিয়ে তার সমাধান করে দিয়ে গিয়েছে।

কিন্তু বারান্দায় পা দিয়েই এক অজানা আতঙ্কে   বরফের মতো জমে গিয়েছেন তিনি। এতদিনের বিশ্বাস কেমন খড়কুটোর মেতে ভেসে গিয়েছে।

"এই না প্লিজ..  ছাড়ো।"

কেমন আদুরে স্বরে কথা বলছে নিঝুম। চোখের পাপড়িগুলো একটা আরেটাকে চুম্বকের মতো টেনে ধরেছে ওর, চোখ খুলতেই পারছেনা নিঝুম হাসির উন্মাদনায়। উল্টো পানি গড়িয়ে  গড়িয়ে পড়ছে ওর চোখের কোল বেয়ে।

"উহু.. … আজ সারাদিন বাইরে ছিলাম, এখন একদম বুকের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখব বউটাকে," অরণ্য নিঝুমের পেটের উপর নাক ঘষতেই ওর চুলগুলো খামচে ধরল নিঝুম। কিন্তু জানালার ওপাশ থেকে নিঝুমের খিল খিল হাসি কী ভীষন কুৎসিত লাগল আসমা বেগমের কানে, কাউকে  বলে বোঝাতে পারবেন না তিনি।

অয়ন নিঝুমকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে রীতিমতো গলায়, বুকে,পেটে এলোপাতারি আদর করছে। নিঝুমের কাপড় চোপড় ততক্ষণে  বেসামাল হয়ে পড়ে আছে একপাশে।

আসমা বেগমের মনে হলো তিনি সহ্য করতে পারছেন না। এত অনাচার তার সংসারে... তাই বুঝি তার সংসার ভেস্তে যাচ্ছে।

বারান্দাটা অন্ধকার হলেও ওদের ঘরটা উজ্জ্বল আলোতে ভেসে যাচ্ছে আর সেই আলোয় নিঝুমের সুখী সুখী চেহারাটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন তিনি।

হতবাক হয়ে গেলেন আসমা। নিঝুমকে দেখলে তো এখন অসুস্থ বলে মনে হয়না। এটা যে অরণ্য না সেটা খুব ভালে করেই বোঝে সে এখন। তাহলে! এভাবে অয়নের সাথে কিভাবে কী? ছি...।ঘৃনায় গা গুলিয়ে আসতে চাইল আসমার। অরণ্যর প্রতি নিঝুমের ভালোবাসাটা একদম খাঁটি মনে করেছিলেন তিনি।

লুকোচুরি Where stories live. Discover now