২১

854 32 2
                                    

"জিজু... আমরা এতদূরে আসলাম আর একবার একটু কুয়াকাটার বিচ ঘুরে দেখবো না? আমার বান্ধবী ঐশী ওর ফুফুদের সাথে কুয়াকাটা ঘুরতে গিয়েছিল। ও বলেছিল এই সমুদ্র সৈকতটাও নাকি অনেক সুন্দর। জিজু প্লিজ আমরা একদিনের জন্য কি ওখানে যেতে পারিনা? এতদূরে বারবার তো আমাদের আসা হবে না, "আশু খুব করুন মুখে অরণ্যর কাছে আবদার করতে লাগল।

"কিন্তু আশু ওখানে যেতে হলে তো অন্তত দুদিনের একটা প্রিপারেশন লাগে। আমার হাতে তো একদম সময় নেই," অরণ্য অসহায় ভঙ্গিতে বলে উঠে। ছোট মানুষ শখ করছে, না বলাও মুশকিল।

"জিজু প্লিজ," আশু কন্ঠে কান্নার আভাস।

অরণ্য এবার সত্যি চিন্তায় পড়ে গেল। আশু ওর একমাত্র শালী, তার উপর আবার বয়সে ঝুমের ছোট। এছাড়া আশু ওদের প্রচুর সাহায্য করেছে বিভিন্ন সময়। সেদিন তো ধরা ধরা খেতে খেতে বাঁচিয়ে দিয়েছে অরণ্যকে। এমন শুভাকাঙ্ক্ষীর  অনুরোধ ফেলে দেয়া কি ঠিক হবে? কিন্তু অরণ্যর হাতে ছুটিও তো নাই, মহা জ্বালায় পড়া গেল। এদিকে বাবা আর শ্বশুরও এসে হাজির হয়েছেন। পরশু সবার একসাথে ঢাকা ফিরে যাবার কথা। অয়ন তো কালকেই চলে যাবে সকালে। এখন এই অবস্থায় কিভাবে কি করবে ও? কুয়াকাটা যাওয়া মানে কাল সারাদিন,পরশু ব্যাক আসলেও বরিশাল আসতেই আধাবেলা আর দুপুরে ব্যাক করলে তো একদম রাত হয়ে যাবে। তার পরের দিন ওরা যদি প্লেনেও ব্যাক করে তাও দুপুর হয়ে যাবে। এরকম হলে মির্জা স্যার ওকে কত আদরের সাথে যে অভ্যর্থনা জানাবেন এখনই বুঝতে পারছে  অরণ্য।

"আমার বরটা কি খুব ব্যাস্ত? " নিঝুম কফির মগটা ধরিয়ে দিল অরণ্যর হাতে। সাদা রঙের নেসক্যাফে লিখা লাল মগটা থেকে গরম ধোয়া উঠতে দেখে অদ্ভুত এক ধরনের আনন্দ হলো অরণ্যর। না ঠিক কফি দেখে নয়, কিন্তু নিঝুমের কফির মগ এনে ওর হাতে দেওয়াটা, এই যত্নটুকু খুব ভালো লাগল অরণ্যর.. এই চাওয়া পাওয়ার হিসেব রাখতে নেই, এই অনুভূতি গুলো অমূল্য।

"তোমার কি খুব কফির তেষ্টা পেয়েছিল? " নিঝুম অরণ্যর গায়ে হেলান দিয়ে বসল। অরণ্য ছাদের কার্নিশে দুই পা ঝুলিয়ে বসেছিল,নিঝুম ওর পাশে বসতেই সতর্ক হয়ে উঠল।

লুকোচুরি Where stories live. Discover now