১০

736 44 6
                                    

"ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায়
আমার ইচ্ছে করে
আমি মন ভেজাবো ঢেউয়ের মেলায়
তোমার হাতটি ধরে।।"

নিঝুম লাল টিপটা দুই ভ্রুর মাঝখানে বসিয়ে দিয়ে গুন গুন করে প্রিয় গানের কলিটা গাচ্ছিল আর নিজেই নিজেকে দেখে লজ্জা পেয়ে হাসছিল। অরণ্যর দেওয়া লাল জামদানীটা পরেছে আজ ও। মায়ের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই পরেছে। রুমানা অবশ্য আর কাউকে বলতে নিষেধ করেছেন। শুধু আশু জানে।

নিঝুম দুই চোখে সুন্দর করে কাজল টানল। এরপর পছন্দের লিপস্টিকটা ঠোঁটে বুলাল।
এরপর দরজায় ভাল করে তাকিয়ে কেউ আছে কিনা দেখল।  না কেউ নেই। নিশ্চিন্ত হবার পর  চুপিচুপি টুপ করে শাড়ির আঁচলটা একবার মাথায় দিয়ে দেখল, বউ সাজলে কেমন দেখাবে। শাড়িটা খুব পছন্দ হয়েছে ওর, রংটা একেবারে রক্ত জমাট।  নিজেকে আয়নায় দেখে কেমন অদ্ভুত লাগছে নিঝুমের।। গত বছরও এই দিনে ও ছিল একদম মুক্ত বিহঙ্গের মতো বাঁধন হারা আর এখন কথায় কথায় শর্ত জুড়ে দেওয়ার এক লোক হয়েছে ওর। কিছু হলেই বাচ্চাদের মতো ঠোঁট ফোলায়। দুদিন আগের কথা মনে হতেই হেসে ফেলল নিঝুম।

কি অদ্ভুত দাবী অরণ্যর। জন্মদিনের উপহার চাই তার, তখনই।  নিঝুম এত করে বলল যে, ওদের দুই ভাইকেই শার্ট কিনে দিবে ও কিন্তু না... সাহেবের  তাতে হবে না। তার নগদ চাই। শেষে নিঝুম যেয়ে এক বাটি পায়েশ এনে অরণ্যর হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু অরণ্য সেটা ছোঁবেও না, মহা ত্যাদর।

শেষে চট জলদি নিঝুমকেই খাইয়ে দিতে হয়েছে পায়েশটা। তারপরও পাজিটা বলে কি," আমি তো তোমার হাতে খেতে চেয়েছিলাম, এখন তো চামচ দিয়ে খাওয়ালে। "


"তো আর কি চাই গিফট? " নিঝুম বেশ রাগ  হয়েই জিজ্ঞেস করেছিল। ব্যাটা খালি প্যাচাচ্ছে।

"আমার সাথে সুন্দর করে সেজেগুজে বাইরে খেতে যেতে হবে। "

অরণ্যর আবদার শুনে নিঝুম পুরো হা। বলে কি এই লোক!

"মানে? ওই দিনই না গেলাম আপনার সাথে খেতে!"

"তো কি? ওই দিন তো ওই দিনই চলে গেছে। আর ওই দিন তুমি আমার মন খারাপ করে দিয়েছিলে। এবার সেরকম  কিছু হওয়া যাবে না, " অরণ্য মুখ বেঁকিয়ে বলেছিল। কি অন্যায় আবদার।  বিয়ের আগে এভাবে ঘন ঘন বাইরে যাওয়া কি ঠিক?

লুকোচুরি Where stories live. Discover now