৪১

618 37 15
                                    


নিঝুম এত যত্ন করে সব রাঁধল অথচ অরণ্য এমন মুখ করে খাচ্ছে যে মনে হচ্ছে শুকনো ঘাস চিবুচ্ছে।

নিঝুমের ভীষন রাগ হচ্ছে, ইচ্ছে হচ্ছে বাটির তরকারি গুলো সব ঢেলে ফেলে দেয়।

মানুষ এত হিংসুটেও হয়?

আর বাবু নিজের বেলায় ষোল আনা ঠিক আছেন কিন্তু ফাহিম ভাইয়ের নাম শুনে তার বাচ্চাদের মতো হিংসা হচ্ছে... কোন মানে হয় এর?

নিঝুমের সাথে কোন কথাই অরণ্য বলছে না... না ভাল, না মন্দ। মনে হচ্ছে নিঝুম একাই ডাইনিংয়ে বসে আছে।

" আমি কিন্তু আজ তোমার বাবুর্চিকে দিয়ে শুধু বাজার করা আর মসলা করান ছাড়া আর কিছু করাইনি।"

"হমম"

"খাবার কী একেবারেই অখাদ্য হয়েছে? এরকম মুখ করে খাচ্ছ কেন? " নিঝুম বিরক্ত হয়ে জানতে চাইল। ও আর মেজাজ ধরে রাখতে পারছে না।

অরণ্য উত্তরে কেবল মাথা দোলাল। ও আসলে কী খাচ্ছে তার কোন স্বাদই ও টের পাচ্ছে না। বড়ো বড়ো চিংড়ি রান্না করা হয়েছে অথচ রান্নাটা মোটেই স্বাদ লাগছেনা। নিঝুমের রান্না এত বাজে ধারনা ছিল না ওর। নাকি ফাহিম আসবে বলে খুশির চোটে এই অবস্থা করেছে রান্নার। ওরা চলে আসলে তখন বোধহয় ভাল করে রাঁধবে। আসলে যত যাই বলুক বাপের বাড়ির লোক আসার কথা শুনলে মেয়েগুলো অতিরিক্ত খুশির চোটে সব গুলিয়ে ফেলে। আর সেই অতিথি যদি হয় বিদেশ থেকে আসা কেউ তাহলে তো আর কথাই নেই, পারলে নিজেকেই  ডিশ হিসেবে দিতে পারলে খুশি হয়। অজান্তেই একটা দীর্ঘশ্বাস পড়ল অরণ্যর। ওর সব রাগ গিয়ে পড়ল ওই ফাহিম নামের লোকটার  উপর। লোকটার চোখের মোটে চামড়া নেই... এক নাম্বারের বেহায়া। ও মরেছে শুনেই চলে আসছে নিঝুমকে বিয়ে করার জন্য... স্কাউন্ড্রেল কোথাকার।

ওরা এখানে বিয়ের পরে দুজনে একটু একান্তে সময় কাটাবে বলে এসেছে, হোক সে অয়নের নাম নিয়েই আর এই লোক সেখানে ড্যাং ড্যাং করতে করতে চলে আসতেছে। কোন জ্ঞানবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের পক্ষে এই ধরনের একটা কাজ যে কতোটা নোংরা, এই লোকের সে নিয়েও কোন মাথাব্যাথা নেই। এই ফাহিম ব্যাটা নিঝুমের ভাই না হলে আচ্ছা করে একটা রাম ধোলাই দেওয়ার ব্যাবস্থা করতো অরণ্য তার জন্য।

লুকোচুরি Tempat cerita menjadi hidup. Temukan sekarang