৩০

504 28 8
                                    

"এ ভুবনে ডুবল যে চাঁদ সে ভুবনে ফুটল কী তা?
হেথায় সাঝে ঝরল যে ফুল হোথায় প্রাতে ফুটল কী তা?
এ জীবনের কান্না যত- হয় কী হাসি সে ভুবনে?
হায়?জীবন এত ছোট কেনো? এ ভুবনে?"

                          -তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়

"আশু তুই এভাবে সেজেগুজে কোথায় যাচ্ছিস? " বড়োফুপির কথায় চমকে উঠল আশু।

"আ..আমি.. ফুপি," ভয়ে ঠক ঠক করে কাঁপতে লাগল আশু।

"হ্যাঁ.. আর তোর মা কই? কাউকে পাচ্ছি না কেন?"

"ফুপি মা তো একটু জিজুদের বাসায় গেছে..."

"কাদের বাসায় গেছে! "

"না মানে ওই অরণ্য ভাইয়া, ওনাদের বাসায় গেছে," থতমত খেয়ে বলল আশু। বড়ফুপির চোখে মনে হয় স্যাটেলাইট বসান। সারা পৃথিবীর ইঞ্চি ইঞ্চি খবর উনার জানা থাকে, মহা জ্বালা।

"অরণ্যদের বাসায়! ওখানে গেছে কেন? এতদিন পরে ওই বাড়িতে তোর মায়ের কী কাজ পড়েছে? আর এসব জিজু ফিজু কী ভাষা... যতো নোংরা আর অসভ্য জিনিস, আর কখনো যেন না শুনি এসব ভাষা। বিয়ে হতো পারেনি তার আগেই এরা দুলাভাই বলা শুরু করে দিয়েছিল," রাগে গজগজ করে থাকেন দিলারা।

"জি.....আর বলব না," আশু মিন মিন করে উত্তর দিল। মনে মনে বলল জিজু আর কী করে বলবো.... বলার তো কোন সুযোগই নাই।

"অ্যাই তোর আম্মু কখন আসবে?"

"আমি জানিনা ফুপি।"

"নিঝুম কই? ওর জন্য ভাল একটা ছেলে  দেখেছি।"

"আপু তো আম্মুর সাথে.. না মানে আপু তো ওই বাড়িতে..না মানে " সব গুলিয়ে ফেলে আশু। এই বড়ো ফুপির এতো বড়ো বড়ো চোখ কপালে উঠতে দেখলে ওর এমনি পিলে চমকে যায়।

"অ্যাই সত্যি করে বলতো.. তুই এরকম তোতলাচ্ছিস কেন? কি জট পাকাচ্ছিস? "

"না.. না... ফুপি, আমি কোন জট পাকাচ্ছি না... সত্যি বলছি," আশু নিজের গলা ছুয়ে প্রমিস করল। কিন্তু দিলারা বেগমের অভিজ্ঞ চোখ, ভাস্তিকে এমন হড়বড় করতে দেখে ওনার সন্দেহ আরও জোরাল হলো।

" আশু.... রুমানা আর নিঝুম এখন কোথায় সত্যি  করে বলবি।"

ফুপির অগ্নিদৃষ্টির সামনে টিকে থাকা মুশকিল হয়ে গেল আশুর, ফুপির দৃষ্টি দিনকে দিন পাকা জহুরীর মতো হয়ে যাচ্ছে... শেষ পর্যন্ত আশু কথাটা বলেই ফেলল,"ফুপি.. আসলে আম্মুর কোনো দোষ নাই।"

লুকোচুরি Waar verhalen tot leven komen. Ontdek het nu