২৯

432 22 5
                                    

"আপনারা কী জমজ ছিলেন?"

"জি..."

"আপনার নামটা জানতে পারি?"

অনেকটা সময় চুপ থেকে খুব বড়ো একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের নামটা উচ্চারন করল মানুষটা... অয়ন রহমান।

"আমরা খুবই দুঃখিত অয়ন সাহেব, আপনার ভাই আসলে তখনই মারা গিয়েছেন.. স্পটেই। আমাদের হাতে চেষ্টা করার মতোও কিছু ছিল না।"

টুপ করে একফোঁটা নোনতা জল বোধহয় বশ মানতে না পেরে গড়িয়ে পড়লো ছেলেটার অবাধ্য চোখদুটোর মায়াবী কোল ধরে। একটা নাম আজীবনের জন্য শূন্যে লীন হয়ে গেল.. একদম ধরা ছোঁয়ার বাইরে, আর কোনদিন সেই কন্ঠের মায়া ডাক শোনা হবেনা.. অনুভূতিটা ঠিক সামলে উঠতে পারছিলনা সে।

এতটা কষ্ট আগে কবে হয়েছিল মনে নেই ওর। দু'হাত দিয়ে নিজের চোখদুটা চেপে ধরে, কান্না মাখানো স্বরে বলে উঠলো, " আমার ভাই আমায় আর কোনদিন জড়িয়ে ধরবে না ডক্টর, সব শেষ। আমি আমার মাকে এখন কী জবাব দেব?"

ডাক্তার সাহেব কোনো উত্তর দিলেন না। কী বলবেন, কোনো সান্ত্বনাই আসলে এ সময়ে একটা মানুষ শান্ত করতে পারেনা।

বুক পকেটে রাখা মোবাইলটা তখনও অনবরত বেজেই চলেছে... অয়ন ওটা বের করতেই দেখল, অহনা নামের মেয়েটা একভাবে ফোন দিয়েই যাচ্ছে.. দিয়েই যাচ্ছে।

.

.

.

.

.

তিন মাস পরের কোন এক পড়ন্ত বিকেলে......

"নিঝু, এই কাপড়টা পরে নে মা," মার কথায় রুমানার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইল নিঝুম। চোখমুখ ঈষত কুঁচকে বোঝার চেষ্টা করল, কী বলছে মা।

রুমানা হাতে গোলাপি একটা শাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শাড়ির দিকে তাকিয়ে আবারও অবাক হলো নিঝুম। এত কারুকাজ কেন এই শাড়িতে? কেমন বিয়ের শাড়ির মতো দেখতে। ওর খুব হাসি পেল। কাল আশু এসে ওকে ধরে হাউমাউ করে খুব কাঁদল। কেন যে অত কাঁদল বুঝল না নিঝুম। কিন্তু ওর খুব বিরক্ত লাগছিল... আজব! আরে এত ভেউভেউ করে কাঁদার কি আছে?

লুকোচুরি Opowieści tętniące życiem. Odkryj je teraz