৫০

989 53 69
                                    

অহনাকে সঙ্গে নিয়ে অরণ্যকে অ্যামব্রসিয়া নামের একটি রেস্টুরেন্টে আসতে হয়েছে। রেস্টুরেন্টে ঢুকেই অরণ্যর মেজাজ গরম হয়ে গেল। রেস্টুরেন্টে পা দিয়ে অহনার প্রথম কথাই হলো চলো আগের দিন যেখানে বসেছিলাম ওই কর্ণারে গিয়ে বসি।

তারমানে অয়ন অহনাকে নিয়ে এর আগেও চট্টগ্রামে এসেছে, আর এই রকম দামী দোকানে এনে খাইয়েছে। একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস অরণ্যর বুক চিরে বের হয়ে আসতে চাইলো। এক... অয়নটা একটা বড্ড ভুল মানুষকে বোকার মতো ভালোবেসেছিল আর অরণ্য নিজের বউ নিয়েও এই সব দামী দোকানে ঢোকার চিন্তা করেনা।

রেস্টুরেন্টে বসেই অরণ্য সিদ্ধান্ত নিল ঝুমকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসলে এই রেস্টুরেন্টে অন্তত একবার হলেও ওকে খাওয়াবে অরণ্য। না হলে নিজের কাছেই কেমন অপরাধী লাগছে ওর। রেস্টুরেন্টেটা  ওভার এক্সপেন্সিভ এটাই শুধু ব্যাপার না, সাথে নিঝুমের পাওনা সঙ্গটা ও অহনাকে দিচ্ছে এই অপরাধবোধটাই ভীষন যন্ত্রনা দিচ্ছে অরণ্যকে। ঝুম অরণ্যর কাছে ওর সঙ্গ ছাড়া আর কিছু চায়নি এ পর্যন্ত আর এই মেয়ের সাথে ও কাজ ফেলে সেই সময় নষ্ট করে ভালোবাসার অভিনয় করছে, অসহ্য।

অবশ্য এই মুহূর্তে এটাই সবচেয়ে বড়ো কাজ ওদের সবার জন্য। অনেক গুলো মানুষের চাওয়া-পাওয়া আর সুখের বিবর্ণ রঙ জড়িয়ে আছে এর সাথে। সেই কষ্টের ঋণ শোধ না করে অরণ্যর ফিরে যাওয়ার উপায় নেই।

"অয়ন... এবার কিন্তু আমরা কক্সবাজারে যেতে পারি। গতবার তো যাওয়া হলো না সময়ের অভাবে।"

কক্সবাজার! অহনার কথায় পিত্তি জ্বলে গেল অরণ্যর। কিন্তু তবু কষ্ট করে ফূর্তি ফূর্তি ভাবটা বজায় রাখতে হলো ওকে, জান বাঁচানো ফরজ কাজ যে।

"দেখি, আগে জরুরী কাজগুলো শেষ করি তারপর।"

"এবারও কী অনেক কাজ নিয়ে এসেছ অফিসের? এই ব্যাংকের চাকরি এতো খারাপ আমার জানা ছিল না।"

"আমারো না," বিরবির করে বলল অরণ্য।

" বিশ্বাস করো বউ অফিসের কোন কাজই এবার সঙ্গে আনিনি... শিট, আই মিন অনা। আসলে তোমাকে টাইম দেওয়াও তো আমার কাজ তাইনা ? "

লুকোচুরি Where stories live. Discover now