৩য় পর্ব

944 55 5
                                    

নিঝুম রিকশায় বসে চারদিক দেখতে দেখতে ভার্সিটিতে যাচ্ছিল। অদীয়ার ফোন পেয়ে মনোযোগটা হারাল ও।

চারদিকটা এখনও হালকা হালকা কুয়াশায় ঢাকা। গরমটা আসলে এখনও ভাল করে জাকিয়ে বসেনি। নিঝুম টিস্যু বের করে নাকের উপরে চেপে ধরল। কেন যেন ফোটায় ফোটায় পানি ঝরছে রাত থেকে। আজব, মনের দুঃখে চোখের বদলে নাক থেকে পানি পড়ে জানা ছিল না.. আনমনেই একটু হাসল নিঝুম। খুব বাজে একটা দিন গেছে কাল। সারারাত হাতের ব্যাথায় ছটফট করেছে ও। সাথে অপমান টাও সেই লেভেলের ছিলো। না.. আর ওই বিশ্রী লোকটাকে নিয়ে ভাববে না নিঝুম। কালকের দিনটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। জীবনে কতকিছুই তে পছন্দ হয়, সবই কি আর পাওয়া যায়? সকালেই মাত্র নিজের কাছে ওয়াদা করেছে ও ব্যাপারটা মুছে ফেলবে মন থেকে।

ক্যাম্পাসে লোকজন সবেমাত্র আসতে শুরু করেছে। নিঝুম রিকশা থেকে নেমে বাংলা ডিপার্টমেন্টের সামনে গিয়ে দাঁড়াল। অদীয়াকে হোস্টেলের গেটের কাছে দেখে হাতের ইশারায় ওকে দাঁড়াতে বলল নিঝুম। অদীয়াকে মনের দুঃখ না বলা পর্যন্ত ওর দুঃখ কমবে না, আর কালকের ঘটনাটা ভোলা ওর জন্য জরুরি। সাত সকালে তাই নাস্তা না করেই বের হয়েছে নিঝুম।

বেলা দশটা পর্যন্ত অদীয়ার সাথে ওর রুমে বসে কাটিয়ে দিল নিঝুম।

সব শুনে অদীয়াও একটু মন খারাপ করল। তারপর নিঝুমকে এই বলে সান্ত্বনা দিল যে, "দেখ নিঝু, ওই ছেলে তোর জন্য নয়। তা না হলে পাঁচশ মাইল দূর থেকেও ও তোর কাছে ঠিক চলে আসত।"

নিঝুম নিজেও সেটা বিশ্বাস করে। তারপরও মন খারাপটা যাচ্ছে না। অদীয়ার সাড়ে এগারোটায় একটা ক্লাস আছে। নিঝুমেরও, কিন্তু ওর করতে ইচ্ছে করছে না। শাইনিকে ফোন দিলে ওর ছোট বোন ধরল। শাইনি ব্যাস্ত... ওর চাচা এসেছে মালয়েশিয়া থেকে। অদীয়ার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিউমার্কেটে একাই আসতে হলো নিঝুমকে।

নতুন কিছু রান্নার বই এসেছে। মন খারাপটা কমে গেল নিঝুমের। সুযোগ পেলেই নতুন নতুন রেসিপি দেখে রাঁধতে চেষ্টা করে ও। মার মত অত ভাল হয়না যদিও তবু নিঝুম চেষ্টা করে। ওর বাবা আর আশু খুব আগ্রহ করে সেগুলো খায়, তাতেই ওর আনন্দ।

লুকোচুরি Where stories live. Discover now