৩৯

694 30 16
                                    


"স্যার?" স্যালুট দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন মেজর মশিউর।

"এসো মেজর, আমি তোমার অপেক্ষাই করছিলাম। "

মেজর মশিউর তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছ থেকে একটা বিশেষ রঙের ফাইল হাতে পেলেন। খুব জরুরি ভিত্তিতে একটি কাজে তাকে যোগদান করতে বলা হয়েছে। কাজটা খুবই গোপনীয় এবং বিপদকজনক।

" পার্বত্য চট্টগ্রামের অলিগলি এখনও তোমার নখদর্পনে আছে আশা করি মেজর।"

উর্ধ্বতন কর্মকর্তার মুখে এমন কথা শুনে মৃদু হাসলেন মশিউর। পার্বত্য চট্টগ্রাম মানেই পাহাড় আর পাহাড় আর সেনাবাহিনীর এই চাকরিতে কম পাহাড় ডিঙাইনি সে এই কটা বছর। ওখানকার গাঢ় সবুজ বনানীর আড়ালে, পথের বাঁকে বাঁকে অনেক নাম না জানা বিপদ লুকিয়ে আছে। সেই পাহাড় আর বিপদ দুটোই আবার তাকে ডাকছে। কিন্তু একজন সৈনিকের জীবন মানেই বন্ধুর পথে হাঁটা, জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে ঘুরে বেড়ানো... তাই হাসি মুখেই ফাইলটা খুললেন মশিউর।

ফাইলটা পড়তে গিয়ে হাসি হাসি মুখটা বদলে গেল মশিউরের, হাসির পরিবর্তে এক ধরনের কাঠিন্য ছড়িয়ে পড়তে লাগল শিথিল পেশীতে ।

পুরো ফাইলটা পড়া শেষ করার পর ঠান্ডা চোখে আর একবার তাকিয়ে দেখল মশিউর লিস্টে থাকা নামগুলোকে, তারপর দৃঢ়তার সাথে বলল, "আমি তৈরি স্যার।"

"আমি জানতাম তুমি এই অপারেশনে যেতে চাইবে... তাই সেদিনের মিটিংয়ে তোমার নামটা প্রস্তাব করেছিলাম।"

"ধন্যবাদ স্যার আমাকে সুযোগটা দেয়ার জন্য।"

"ইটস ওকে মাই বয়।"

স্যালুট দিয়ে কক্ষটি থেকে বের হয়ে আসলেন মশিউর। এক্ষুনি তাকে ব্যাগ গোছান শুরু করতে হবে। কাগজের কালো কালো লিখাগুলো যেন তীব্র এক দ্যুতি নিয়ে তার চার বছর আগের জীবনটাকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে, সঙ্গে অনেক অনেক দেনা পাওনাও।

....................

অরণ্য যতবার ওর মাথার বালিশটা বিছানায় রাখছে ততবার সেটা আবার ঘুরে ঘুরে মেঝেতে কার্পেটের উপর চলে আসছে।

"এটা কী ধরনের পাগলামো হচ্ছে ঝুম?"

নিঝুম কোন উত্তর না দিয়ে অরণ্যর বালিশটা আবার কার্পেটের উপর ছুড়ে দিল, তারপর দ্রুত নিজের বালিশের মধ্যে মুখ লুকাল।

লুকোচুরি Where stories live. Discover now