সম্মিলিত লেখকের দের গল্পঃ অশুভ

211 9 1
                                    

(প্রথম দুই প্যারা একই হবে অন্তহীন গল্পটার মত তবে এরপরের গল্পে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করেছে) 

ঠিক যখন মনে হয়েছিলো যে আমার দ্বারা আর কোন চাকরি বাকরি পাওয়া হবে না ঠিক সেই সময়েই চাকরিটা এসে হাজির হল আমার কাছে । অনেকটা অপ্রত্যাশিত ভাবে । আমি অনেক আগেই চাকরির আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম । চাকরির পড়াশুনা করতে যে পরিমান ধৈর্য্য লাগে সেটা আমার ছিল না । আমি ব্যবসার কথা ভাবছিলাম । তবে মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেদের ব্যবসার জন্য সব থেকে দরকারী জিনিসটাই থাকে না । আমারও ছিল না । টাকার অভাবে কোন ভাল ব্যবসা যে করবো সেটাও সম্ভব হচ্ছিলো না । শেষে এমন একটা পরিস্থিতি হল আমি ঢাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম । ঢাকায় থাকলে সামনের কয়েক দিন পরে হয়তো আমাকে না খেয়ে থাকতে হবে ।

ঢাকার প্রতি আমার কোন কালেই কোন মায়া ছিল না । এখানে আমি এসেছিলাম কেবল পড়াশুনা করতে এবং পড়াশুনা শেষ করে একটা জীবিকার নির্বাহ করতে । এতোদিন এখানে থাকার পরেও সেই কাজের কিছুই হল না । এতোদিন টিউশনী আর কোচিংয়ে ক্লাস নিয়ে পার করেছি । করোনা শুরুর পর থেকে সেগুলো কমতে কমতে একেবারে কমে গেল । এমন একটা অবস্থা যে ঠিক ঠাক মত খেয়ে পড়ে থাকাই মুস্কিল হয়ে উঠলো । বাসা থেকে জানালো যে আমি যেন বাসায় চলে যাই । সেখানে গিয়েই কিছু করার চেষ্টা করি । আমি জানি সেখানে গেলে আমার পক্ষে কিছুই করা সম্ভব হবে না । আমার বাবা স্থানীয় একটা পোয়েল্ট্রি ফিডের ফ্যাক্টরীতে চাকরি করেন । সেটার মালিককে বলে হয়তো আমাকে সেখানে ঢুকিয়ে দিতে পারেন তিনি । আপাতত এই সম্ভবনা ছাড়া আর কিছু নেই ।

আমার যদিও এতে কোন সম্মতি ছিল না কিন্তু এছাড়া আপাতত আর কোন উপায়ও আমি দেখছিলাম না । তাই ঠিক করলাম যে গ্রামেই ফিরে যাবো । যখন মোটামুটি সিদ্ধান্ত ফাইনাল করে ফেলেছি তখনই চাকরির নিয়োগ পত্রটা এসে হাজির হল আমার কাছে । আমার প্রথমে মনেই পড়লো না যে আমি কবে এই অফিসে ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম । অবশ্য আমি অনেক কয়টা অফিসে ইন্টারভিউ দিয়েছি । কর্মক্ষেত্রের নামটা দেখার পরে আমার মনে পড়লো । প্রায় বছর খানেক আগে আমি এই অফিসে ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম । একটা এনজিও ধরনের অফিস। তারা বলেছিলো যে যদি আমার চাকরি হয় তাহলে আমার বাংলাদেশের একেবারে শেষ প্রান্তে গিয়ে কাজ করতে হবে । এনজিওটা গ্রামের মানুষদের নানান ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে, তাদের এবং তাদের বাচ্চাদের পড়ালেখা করায় । আমার কাজ হচ্ছে এই রকম একটা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা ।

অতি-প্রাকৃত গল্পWhere stories live. Discover now