ভদ্রমহিলা আসতে আরও মিনিট দশের সময় নিলেন । অবশ্য আমার তেমন কোন সমস্যা হচ্ছিলো না । আমি আপন মনে করে মোবাইলে গেম খেলছিলাম । আর ঘরের চারিপাশটা দেখছিলাম । মুভিতে যেমন বড়লোকদের বাসা দেখা যায় এই বাসাটাও ঠিক সেই রকম । দুইতলা বাসা । ঘরের ভেতর দিকে সিড়ি । আর ঘর সাজানোর জিনিস পত্রের বর্ণনা আর নাই বা দিলাম । বাড়ির মালিকের যে টাকার কোন অভাবে নেই সেটা পরিস্কার ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ।
যখন ভদ্রমহিলা ঘরে ঢুকলো আমি তার দিকে একবার তাকিয়েই চোখ সরিয়ে নিলাম । বড়লোকদের মনের ভেতরে ঢুকতে যাওয়াটা মোটেও সুখকর অভিজ্ঞতা নয় । এদের বাইরেটা যতই ফিটফাট হোক না কেন ভেতরটা মোটেই এতো ফিটফাট হয় না । এর আগেও আমি বেশ কয়েকবার এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি । তাই সে চেষ্টা করলাম না !
কিন্তু আমাকে দেখার সাথে সাথে ভদ্রমহিলার যে কথাটা মনে হল সেটা বুঝতে আমার কষ্ট হল না । খানিকটা তাচ্ছিলের দৃষ্টি আমার চোখ এড়ালো না । আমি ওনাকে দেখে উঠে দাড়িয়েছিলাম । আবার বসে পড়লাম । ভদ্রমহিলা বললেন
-বস বস !
অবশ্য আমি আগেই বসে পড়েছি । তিনিও বসতে বসতে বললেন
-বাসা চিনতে অসুবিধা হয় নি তো !
-না । সমস্যা হয় নি ।
আমাদের মাঝে আগেই ফোনে কথা হয়েছিলো । তিনি আমাকে তার বাসায় আসার পথ বুঝিয়ে দিয়েছেন ! ভদ্রমহিলা খানিকটা চুপ করে থেকে বললেন
-শাহানার আম্মু তোমার কথা আমাকে খুব করেই বলেছেন । অনেক প্রশংসা করেছেন । দেখো আমার মেয়েটার কিছু উন্নতি করতে পারো কি না ! ও যে এমন খারাপ করবে আমি বুঝতে পারি নি ।
শাহানা আমার ছাত্রী । বলতে গেলে সেখান থেকেই আমার অন্যান্য টিউশনী গুলো চলে আসে । শাহনাকে একেবারে শূন্য থেকে ক্লাসের অন্যতম ছাত্রী বানানোর পেছনে অবশ্য আমার হাত আছে । আমার সেই বিশেষ ক্ষমতার হাত আছে আসলে । সেই থেকেই শাহানার আম্মু আমাকে খুবই ভাল জানে । সেখান থেকেই এই বাসায় আজকে আমার আগমন । ইনার মেয়েও নাকি ইংরেজিতে বেশ খারাপ করেছে । কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না । এখন আমার দায়িত্ব পড়েছে তাকে ইংরেজি শেখানোর ! কিন্তু আমাকে দেখে তিনি খানিকটা হতাশ হয়ে পড়েছেন । তার মনে সন্দেহ জাগছে যে আমি আসলেই সেটা পারবো কি না !
YOU ARE READING
অতি-প্রাকৃত গল্প
Horrorমাঝে মাঝেই ভুতের গল্প লিখি । এখানেই তেমনি কিছু গল্প যুক্ত হবে । কিছু পুরাতন গল্পও এড হবে যেগুলো আগে লিখেছি । গল্প বেশি বড় হয়ে গেলে দুই পর্বে নয়তো এক পর্বেই শেষ হবে প্রতিটি গল্প । রাফায়েল সিরিজের সমস্ত গল্প এখানে পাওয়া যাবে ।