চুড়েলের পাল্লায়.....

445 30 12
                                    

প্রিন্সিপাল স্যার আমাকে বারবার করে বলে দিয়েছে যাতে রাতের বেলা কোন ভাবেই বাইরে না বের হই । কেউ যদি নাম ধরে ডাকে কিংবা অন্য যে কোন আওয়াজ শুনি তবুও যেন কোন ভাবেই বাইরে না বের হই । কারণ হচ্ছে এই এলাকাতে নাকি চুড়েল আছে । চুড়েল মানে হচ্ছে মেয়ে ভুত ! আমরা যেটাকে পেত্নী বলে চিনি । আমি কেবল মাথা কাত করে সম্মতি জানিয়েছে । হাসি চাপতে একটু বেগ পেতে হয়েছে অবশ্য । তবে বৃদ্ধ প্রিন্সিপাল স্যারের মুখের সামনে হাসতে পারি নি । কিন্তু একটু অবাক না হয়ে পারি নি । অংকের শিক্ষক হয়েও তিনি ভুতে বিশ্বাস করেন এটা দেখে খানিকটা অবাকই হয়েছি ।

চাকরি বাকরি করার ইচ্ছে আমার কোন দিন ছিল না । জীবনের একটা বড় সময় আমি কাটিয়ে দিয়েছি বেকার ভাবে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়িয়ে । বিশেষ করে তৃষার চলে যাওয়ার পর থেকে আমার কোন কিছুর প্রতিই আগ্রহ ছিল না । কোন কিছুতেই আমার মন বসতো না । সময় কাটানো বলতে কেবল বই পড়তাম । কিংবা ল্যাপটপে মুভি দেখতাম । আর পেট চালানোর জন্য কিছু মানুষজনকে পড়াতাম । ব্যাস এই ভাবে কত গুলো বছর চলে গেল । কিন্তু সারা জীবন তো আর টিউশনী করে কাটানো যাবে না । তাই চেষ্টা চরিত্র করে নিবন্ধন টা দিয়ে ফেললাম । পাশ করতে খুব বেশি বেগ পেতে হল না । শেষ পর্যন্ত এই অখ্যাত কলেজে চাকরিটা হয়েই গেল। কলেজটা আমার পাশের জেলাতে । তাই প্রতি বৃহস্পতিবারে আমি বাসায় চলে যেতে পারবো । বরিবারে আমার কোন ক্লাস নেই । সেই রকম করেই রুটিন করা। সেই হিসাবে টানা তিন থাকা যাবেন বাসাতে । আর বাকি চারদিন এখানে ।

ঢাকা শহরে থাকতে থাকতে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম । বিশেষ করে একা একা থাকতে থাকতে । সব কাজ একা একা করতে আর ভাল লাগছিলো না । অন্তত সপ্তাহের তিন দিন এখন বাসায় থাকা যাবে । মায়ের হাতের রান্না খাওয়া যাবে আরাম মত । বাকি চার দিনের অন্তত দুই দিন বাসা থেকে নিয়ে যাওয়া খাবার দিয়েই চলে যাবে । আর অন্য দুইদিন কাজের ছেলেটার সাহা্য্যে কিছু বানিয়ে নিতে পারবো আমি । ঢাকাতে তো আমি নিজের রান্না নিজেই করেছি । সুতরাং কোন সমস্যা হওয়ার কথা না ।

অতি-প্রাকৃত গল্পWhere stories live. Discover now