গল্পঃ রুম নম্বর ৫১৩

430 21 8
                                    

ভেবেছিলাম যে দিনে দিনে কাজ শেষ করে ফিরে যাবো কিন্তু এখানকার যা অবস্থা দেখতে পাচ্ছি তাতে মনে হচ্ছে আরও দিন কয়েক থাকতে হবে । বসকে ফোন দিলাম । বস বলল কাজ শেষ করেই আসতে । আর রাতে যেন একটা হোটেলেই কাটিয়ে দিই । এই খানে যে কোম্পানির রেস্ট হাউজটা রয়েছে সেটা অনেক দিন থেকেই বন্ধ । লোকজন নেই । দুই দিন আগে বললে হয়তো সেটা খুলে পরিস্কার করিয়ে রাখা যেত । যেহেতু বলা হয় নি তাই আপাতত কিছু কিছু করার নেই ।

আমার অবশ্য খুব একটা সমস্যা নেই । আমি শহরের এদিক ওদিক ঘুরতে লাগলাম কিছু সময় । ভাল একটা হোটেলের খোজে । কয়েকটা পেলাম বটে তবে সেগুলো পছন্দ হল না । বাইরে থেকেই মনে হল এখানে থাকার চেয়ে রাস্তায় রাত কাটানো ভাল হবে । তবে অবশেষে একটা পাওয়া গেল । দ্য সাইনমস । শহরের এক প্রান্তে অবস্থিত । তবে দেখতে শুনতে বেশ ভাল । ভাড়াটাও একটু বেশি । অবশ্য আমার তাতে খুব বেশি সমস্যা নেই । বিল তো আর আমার পকেট থেকে যাচ্ছে না ।

বেলবয় আমাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে এল আমার রুমে । দরজা খুলে জিনিস পত্র রাখতে রাখতে ছেলেটা বলল, স্যার একটা কথা !

আমার মনে হল বুঝি এখনই বকশিষ চাইবে । কিন্তু সে বকশিষ চাইলো না । বলল, আজকে আমাদের গেস্ট অনেক । তাই আপনাকে এই রুমটা দেওয়া হয়েছে । নয়তো এই রুম গুলোতে আমরা কাউকে থাকতে দেই না ।

-মানে?

আপনার রুম নাম্বার ৫১২। আপনার পাশের টা ৫১৩ । এবং তার পাশের টা ৫১৪ । খুব বাধ্য না হলে ৫১২ আর ৫১৪ নম্বর রুম আমরা কখনও ভাড়া দেই না ।

-আর ৫১৩?

-ওটা স্যার বন্ধ । কখনই ভাড়া দেওয়া হয় না । আপনার কাছে কেবল একটা অনুরোধ । কোন ভাবেই ঐ রুমের কিহল দিয়ে ভেতরে তাকাবেন না ।

-কেন? ওটা কি ভুতের রুম ?

খানিকটা ঠোট্টা করেই বললাম। বাইরের দেশে অনেক হোটেলই এমন আছে যেখানে কোন ফ্লোরে ১৩ নম্বর ঘর রাখা হয় না । বারোর পরে লাফ দিয়ে চৌদ্দ । একই ভাবে কোন কোন হোটেলে থার্টিন ফ্লোরই থাকে না । এসব সব পশ্চাত্যের কুসংস্কার । আমাদের দেশেও কি রয়েছে এমন টা?

অতি-প্রাকৃত গল্পWhere stories live. Discover now