ফুড ডেলিভারি সার্ভিস

747 29 4
                                    

একটা সময়ে দুপুরের খাবার খেয়েই আমাকে দৌড় দিতে হত টিউশনিতে। দুপুরে ঘুমানোর উপায় ছিল না। কিন্তু লকডাউনের পর থেকে টিউশনী দুটোই বন্ধ হয়ে গেল । হাতে আমার অফুরন্ত সময় । ক্যাম্পাসে যেতে হয় না । কিন্তু সমস্যা হচ্ছে টিউশনী চলে যাওয়ার কারণে আমার হাত খরচে টান পড়তে শুরু করলো । বাসায় আমার টাকা চাইতে কখনই ভাল লাগে নি । বাধ্য হয়ে অন্য কাজ খুজতে শুরু করলাম । পেয়েও গেলাম একটা । ডেলিভারি ম্যানের কাজ ! তাও আবার রাতের বেলা ।

রাতের কাজ করতে হয় বলেই আমাকে এখন দুপুর বেলা ঘুম চলে আসে । আজকেও সেই রকম পরিকল্পনাই ছিল কিন্তু জেনির কারণে সেটা বাস্তবায়ন করা সম্বব হল না।

জেনি ফোন দিয়েছে । তার নাকি জরুরী কথা আছে ! আমাকে বলতেই হবে ! এবং আমাকে তা শুনতেই হবে । এটার সাথে নাকি আমার নিজের নিরাপত্তাও জড়িত ।

ঠিক হল দুপুরের খাবার আমরা এক সাথে খাবো ! নির্ধারিত সময়ে নির্ধারিত স্থানে পৌছে গেলাম । ডেলিভারি শুরুর পর থেকে অন্তত এই ব্যাপারটা আমার ভেতরে বেশ ভাল ভাবেই পেয়ে বসেছে । যে কোন স্থানে সময় মত গিয়ে পৌছানো । রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখি জেনি আগে থেকেই সেখানে বসে আছে । ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আমার বুঝতে কষ্ট হল না যে সে কিছু একটা নিয়ে চিন্তিত কিংবা বলা যায় কিছুটা ভীত সে ! আমরা রাত তিনটা পর্যন্ত ডেলিভারির কাজ করি । তারপর আমাদের ছুটি । আমি সোজা বাসায় গিয়ে ঘুম দেই । জেনির চোখের দিকে তাকিয়ে মনে হল ও একদমই ঘুমাতে পারছে না কদিন ধরে । চোখের নিচে কেমন কালো দাগ হয়ে গেছে । সেই সাথে চোখ গুলো যেন একটু বেশি ভেতরে ঢুকে গেছে ।

আমাকে দেখতেই জেনি খানিকটা হাসলো । শুকনো হাসি । মেয়েটা আসলেই কিছু নিয়ে চিন্তিত ।

আমি একটু হেসে বললাম, কি খবর? এতো জরূরী তলব ?

জেনি আমার দিকে তাকিয়ে বলল, আমি আর কাজ করবো না ?

আমি খানিকটা অবাক হয়ে বললাম, সেকি কেন ?

-না, আমি কাজ করবো না । তোমারও উচিৎ কাজ টা না করা !

বুঝতে পারলাম যে জেনির সাথে খারাপ কিছু হয়েছে কিংবা ও এমন কিছু দেখে ফেলেছে সেটা ওর দেখা উচিৎ হয় নি । আমি একটা বড় করে নিঃশ্বাস ফেললাম । মেয়েটাকে প্রথম যেদিন দেখেছিলাম সেদিনই মনে হয়েছিলো এই মেয়েটা কাজটা করতে পারবে না ঠিক মত । আজকে ঠিকই আমার ধারনাটা সত্যিই হল । বললাম, কি হয়েছে বলবে আমাকে ?

অতি-প্রাকৃত গল্পWhere stories live. Discover now