অভিশপ্ত চোখ (রাফায়েল সিরিজ ০৫)

1.4K 46 6
                                    

শুরুর আগে

রাইলান শেখ পথ চলতে মোটেই কষ্ট হচ্ছে না । সব কিছু পরিস্কার দেখা যাচ্ছে । এবং এই পরিস্কার দেখা যাওয়া নিয়েই রাইনাল শেখের যত চিন্তা । সুন্দর বনের এই জায়গাটা অন্যান্য যে কোন জায়গা থেকে অনেক বেশি গভীর । এখানে দিনের বেলাতেও ঠিক মত আলো প্রবেশ করে না । আর এখনও রাতের বেলা । তাহলে সব কিছু এতো পরিস্কার কিভাবে দেখা যাচ্ছে ?

রাইনালের মনের ভেতরে একটা কুঁ ডেকে উঠলো । এই এলাকাটা অন্যান্য শিকারীরা এড়িয়ে চলে বলতে গেলে । সুন্দরবনের এই এলাকা নিয়ে তাদের ভেতরে অদ্ভুদ ভয় কাজ করে । অনেকেই নাকি এর আসে পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় একটা মেয়েকে দেখতে পেয়েছে । সেই সাথে অদ্ভুদ এক জন্তু । জন্তুটার মাত্র একটা চোখের কোটর আছে ঠিক কপালের মাঝ খানে । কিন্তু সেখানে কোন চোখ নেই । আগে নাকি চোখ ছিল তবে জন্তুটা চোখটা হারিয়ে ফেলেছে । চোখের কোটরের জায়গায় একটা সীমাহীন শূন্যতা আর কালো অন্ধকার থাকে । আর মেয়েটার চোখ দিয়ে আগুন বের হয় । প্রায় রাতে মেয়েটা আর জন্তুটা বাইরে বের হয় সেই হারানো চোখে সন্ধানে ।

রক্তলাল সেই চোখ যারা যারা এদের দেখেছে তারা কেউই নাকি খুব বেশি দিন বাঁচে নি । রাইনাল এসব কিছু বিশ্বাস করে না । ওর শিকারের জন্য এদিকেই ফাঁদ পেতে রাখে । ফরেস্ট অফিসারেরা এদিকে খুব একটা আসে না তাই ফাঁদ গুলো হারায় না । অন্যান্য পোচারদের ফাঁদ গুলো প্রায়ই হারিয়ে যায় ।

রাইনাল শেখ আরও একটু এগিয়ে গেল । প্রতি পদক্ষেপের সাথে সাথেই আলোর তীব্রতা বাড়ছে । আলোর উৎসের দিকে এগিয়ে চলছে সে । তবে তার মন বলছে এখনই এখান থেকে চলে যাওয়া উচিৎ । কিন্তু তীব্র এক কৌতুহল তাকে পেছনে চলে যেতে দিল না । আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যেতেই একটা তীক্ষ চিৎকার শুনে রাইনাল শেখের বুকটা কেঁপে উঠলো ।

চিৎকার টা শোনার সাথে সাথেই যে কথাটা সবার আগে মনে পড়লো সেটা হল হল "উলডা" । রাইনাল শেখের দাদার মুখেও সে এই প্রাণীর কথা শুনেছে । কেউ নাকি কোন দিন এই জন্তুকে দেখে বেঁচে থাকতে পারে না । কেউ কেউ সাথে সাথেই মারা যায় আবার কেউ কেউ কয়েক দিনের ভেতরে । যারা সুন্দরবনের ভেতরে চলাচল করে তাদের অনেকেই কেবল চিৎকারই শুনেছে । যারা দাবী করেছে তারা দেখেছে নিজের চোখে তারা খুব বেশি দিন বাঁচে নি । মারা গেছে কয়েক দিনের মাঝে ।

অতি-প্রাকৃত গল্পWhere stories live. Discover now